বিদ্যুৎ ও কম্পিউটার প্রকৌশলবিদ্যার ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করা একটি রোবট, “পর্দুবিক’স কিউব”, রুবি’স কিউব (Rubik’s Cube) সমাধান করতে সক্ষম। এই রোবটটি এতটাই দ্রুতগতি সম্পন্ন যে, মানুষের চোখের পলকের চেয়েও কম সময়ে এটি সমস্যার সমাধান করতে পারে।
পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের (Purdue University) এই উদ্ভাবন প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্ট লাফায়েতে অবস্থিত পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের এলমোর ফ্যামিলি স্কুল অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চার শিক্ষার্থী – ম্যাথিউ পাত্রোহে, জুনপেই ওটা, এদেন হার্ড এবং অ্যালেক্স বের্তা – এই রোবটটি তৈরি করেছেন। তাদের তৈরি করা যন্ত্রটি মাত্র ০.১০৩ সেকেন্ডে একটি রুবি’স কিউব সমাধান করতে পারে।
যেখানে একজন মানুষের চোখের পলক ফেলতে সময় লাগে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিসেকেন্ড।
পর্দুব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ম্যাথিউ পাত্রোহে জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই এমন একটি যন্ত্র তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা রুবি’স কিউব সমাধানের ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় বলতাম আমার অনুপ্রেরণা ছিল আগের বিশ্ব রেকর্ড। হাই স্কুলে থাকাকালীন সময়ে, আমি এমআইটি-র (MIT) শিক্ষার্থীদের তৈরি করা একটি রোবটের ভিডিও দেখেছিলাম, যেটি ৩৮০ মিলিসেকেন্ডে কিউবটি সমাধান করতে পারতো।
সেই থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল, একদিন এর থেকেও দ্রুত সমাধান করার মতো কিছু তৈরি করার।”
এই দলের সাফল্যের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অপারেটিভ প্রোগ্রাম (co-op program)-এর অবদান রয়েছে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন শিল্পে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পান।
এদেন হার্ড জানান, “আমাদের দল তৈরি হয়েছিল এই কো-অপারেটিভ প্রোগ্রামের কারণে। এটি শুধু আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করেনি, বরং আমাদের প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা অর্জনেও সাহায্য করেছে।”
“পর্দুবিক’স কিউব”-এর কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায়, এটি কালার শনাক্তকরণের জন্য “মেশিন ভিশন” প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এছাড়াও, কিউবটিকে দ্রুত সমাধান করার জন্য এতে বিশেষ অ্যালগরিদম এবং অত্যন্ত সুসংহত মুভমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
ব্লুটুথের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কিউবটিকে এলোমেলো করতে পারে এবং এর সমাধানও দেখতে পারে।
এই উদ্ভাবনের স্বীকৃতিস্বরূপ, “পর্দুবিক’স কিউব” এপ্রিল মাসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে “দ্রুততম রোবট” হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এর আগে, এই রেকর্ডটি ছিল জাপানের মিতসুবিশি ইলেকট্রিক-এর প্রকৌশলীদের দখলে, যারা মে মাসে কিউবটি সমাধান করতে সামান্য বেশি সময় নিয়েছিলেন।
মানুষের মধ্যে রুবি’স কিউব সমাধানের দ্রুততম রেকর্ডটি রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার সেরিটোস-এর ম্যাক্স পার্কের দখলে, যিনি ৩ সেকেন্ডের সামান্য বেশি সময়ে কিউবটি সমাধান করেছিলেন।
তথ্য সূত্র: পিপল