লন্ডনে আবিষ্কৃত হলো রোমান সাম্রাজ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার: ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা জীবনের প্রতিচ্ছবি। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস আজও মানুষকে আকর্ষণ করে।
সম্প্রতি, লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ব্লুমবার্গ সাইটে খননকার্যের ফলে রোমান সভ্যতার এক বিশাল ভাণ্ডারের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা বিশ্বজুড়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ইতিহাস প্রেমীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই খননকার্য থেকে প্রায় ১৪,০০০-এর বেশি ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে, যা সম্ভবত এই পর্যন্ত পাওয়া যাওয়া সবচেয়ে বড় সংগ্রহগুলির মধ্যে অন্যতম।
খননকার্যটি চালানো হয় ২০১৬ সালে, যখন ব্লুমবার্গ এই এলাকার ব্যাংক জংশন অধিগ্রহণ করে। এখানে পাওয়া গেছে প্রায় ৮১,০০০-এর বেশি পশুর হাড়ের টুকরো এবং ৭৩,০০০-এর বেশি মাটির পাত্রের ভাঙা অংশ।
এই আবিষ্কারগুলি থেকে জানা যায়, খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে (AD 47/48) লন্ডনে মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল।
খননকার্যের সময় পাওয়া গেছে কাঠের ফলকে মোম দিয়ে লেখা প্রায় ৫০০টি লেখার নিদর্শন। এর মধ্যে ৮০টির পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এই লেখাগুলির মধ্যে তৎকালীন সময়ে দেনা-পাওনার হিসাব (IOU) এবং ব্যক্তিগত বার্তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, পাওয়া গেছে ৭০০-এর বেশি জুতা, যা তখনকার মানুষের রুচি ও জীবনযাত্রার ধারণা দেয়।
চামড়ার এই জুতাগুলো এত ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল যে দেখে মনে হয় যেন সেগুলো বেশি পুরোনো নয়।
এই খননকার্যের ফলে শুধু মানুষের জীবনযাত্রা নয়, তৎকালীন সমাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, পাওয়া গেছে বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার, যা সে সময়ের মানুষের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি।
এছাড়াও, শিশুদের প্লেগ থেকে বাঁচানোর জন্য ব্যবহৃত কিছু তাবিজও খুঁজে পাওয়া গেছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করেন, এই আবিষ্কারগুলি রোমান সাম্রাজ্যের সময় লন্ডনের মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং বাণিজ্যের এক উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে। এই খননকার্যের ফলে পাওয়া যাওয়া জিনিসপত্রগুলি বর্তমানে লন্ডনের মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং সম্ভবত ২০২৬ সাল থেকে জনসাধারণের জন্য তা প্রদর্শিত হবে।
এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, ইতিহাসের গভীরে লুকানো কত কিছুই না এখনো আমাদের অজানা। প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে আমরা অতীতের অনেক অজানা তথ্য জানতে পারি, যা আমাদের বর্তমানকে বুঝতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের ইতিহাসেও এমন অনেক নিদর্শন রয়েছে, যা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			