৫০ বছর পর ভালোবাসার স্বীকারোক্তি! রোমান্স না জানার যন্ত্রণা!

ভালোবাসা প্রকাশের দ্বিধা: পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্যে এক নারীর অভিজ্ঞতা।

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের বিবাহিত জীবনে, ভালোবাসার গভীরতা থাকলেও, ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গিতে যেন কোথায় একটা ফাঁক রয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন সত্তরের কোঠায় পা রাখা এক নারী। তিনি জানেন, তাঁর এই “রোমান্স” এর অভাব তাঁর সঙ্গীকে হতাশ করে।

কিন্তু কীভাবে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটানো যায়, তা যেন তাঁর কাছে এক বিরাট প্রশ্ন।

ছেলেবেলা থেকেই এই নারীর মনে ভালোবাসার প্রকাশ নিয়ে কোনো ধারণা তৈরি হয়নি। বাবা-মায়ের মধ্যে ভালোবাসার তেমন কোনো বহিঃপ্রকাশ তিনি দেখেননি। এমনকি বড় বোনের বিয়েতেও ভালোবাসার কোনো বিশেষ চিহ্ন খুঁজে পাননি।

তিনি বলেন, “আমি হয়তো ভালোবাসি, তবে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে পারি না।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করা। ভালোবাসার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। কারো কাছে ভালোবাসার প্রকাশ হলো পরস্পরকে স্পর্শ করা, যেমন— হাতে হাত রাখা, চুমু খাওয়া।

আবার কারো কাছে প্রিয়জনের জন্য কিছু করা— যেমন উপহার দেওয়া, পছন্দের খাবার রান্না করা, অথবা এমন কিছু যা ভালোবাসার মানুষকে খুশি করে। হয়তো তারা একে অপরের “ভালোবাসার ভাষা” বুঝতে পারছে না।

বিশেষজ্ঞ আরও যোগ করেন, এমনও হতে পারে যে, তিনি হয়তো ভালোবাসেন, কিন্তু তাঁর ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গি তাঁর স্বামীর ভালো লাগে না।

উদাহরণস্বরূপ, ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে ফুল দেওয়া অনেকের কাছে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে, কিন্তু তাঁর কাছে হয়তো নয়। বরং বাবার মৃত্যুর পর, যখন পরিবারের অন্য কারো আগ্রহ ছিল না, তখন তাঁর স্বামী বাবার সেলারে গিয়ে তাঁর জিনিসপত্র গুছিয়েছিলেন, যা তাঁর কাছে অনেক বেশি “রোমান্টিক” মনে হয়েছিল।

এই বিষয়টি থেকে বোঝা যায়, ভালোবাসার প্রকাশ বিভিন্ন রূপে আসতে পারে। ভালোবাসার সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে হলে, সঙ্গীর ভালো লাগা, খারাপ লাগাগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

নিয়মিতভাবে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে হবে, একে অপরের প্রতি করা ভালো কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে। হয়তো দেখা যাবে, ভালোবাসার প্রকাশগুলো আসলে তাঁদের সম্পর্কের মধ্যে সবসময়ই ছিল, শুধু তাঁরা সেটিকে সেভাবে দেখেননি।

সুতরাং, ভালোবাসার প্রকাশভঙ্গির ভিন্নতা থাকতে পারে। মূল বিষয় হলো, সঙ্গীর প্রতি গভীর অনুভূতি ও যত্ন নেওয়া।

আলোচনার মাধ্যমে একে অপরের “ভালোবাসার ভাষা” বোঝার চেষ্টা করা এবং সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করা সম্ভব।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *