**রুমেনিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কট্টর-ডান প্রার্থীর জয়, ইইউ-তে অস্থিরতার আশঙ্কা**
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রুমানিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে কট্টর-ডানপন্থী প্রার্থী জর্জ সিমিয়ন জয়লাভ করেছেন। তাঁর এই জয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিমিয়ন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধী এবং তিনি নিজেকে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেন।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, ৩৮ বছর বয়সী সিমিয়ন প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, বুখারেস্টের মেয়র এবং মধ্যপন্থী প্রার্থী নিকুসোর ড্যান-এর ভোটের ব্যবধান ছিল উল্লেখযোগ্য।
ড্যান প্রায় ২১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আগামী ১৮ই মে দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে চূড়ান্ত লড়াই হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সিমিয়নের এই জয় ইইউ-এর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, রুমানিয়ার রাষ্ট্রপতি পররাষ্ট্রনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং বিচার বিভাগীয় নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
সিমিয়ন নির্বাচিত হলে, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো রুমানিয়াও ইইউ-এর মূল ধারা থেকে সরে আসতে পারে। এর ফলে, ইইউ-এর মধ্যে বিভাজন আরও বাড়তে পারে।
সিমিয়ন তাঁর বক্তব্যে ইউরোপকে “সোভরেন নেশন”-এর একটি জোট হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন, যা ইইউ-এর নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি প্রায়শই রাশিয়ার সমালোচনা করেন, কিন্তু ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করেন।
উল্লেখ্য, রুমানিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে এবং দেশটি ইইউ ও ন্যাটোর সদস্য। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রুমানিয়া এর মধ্যেই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।
অন্যদিকে, নিকুসোর ড্যান রুমানিয়ার “প্রো-ওয়েস্টার্ন” বা পশ্চিমা-পন্থী অবস্থান ধরে রাখতে চান।
তিনি এই নির্বাচনকে রুমানিয়ার ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর মতে, এই নির্বাচন একদিকে যেমন পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রুমানিয়ার সম্পর্ককে সুসংহত করবে, তেমনই সিমিয়নের জয় হলে তা রুমানিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত আগের নির্বাচনেও কট্টর-ডানপন্থী প্রার্থী ক্যালিন জর্জেস্কু জয়লাভ করেছিলেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে রাশিয়ার মদতের অভিযোগ ওঠায় নির্বাচন বাতিল করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে ড্যানের জন্য সিমিয়নকে হারানো কঠিন হতে পারে, কারণ তিনি ইতিমধ্যে ভোটারদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সমর্থন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান