মার্ক টোয়েনকে নিয়ে রন চেরনোর বিস্ফোরক গবেষণা! (প্রকাশের অপেক্ষা)

বিখ্যাত জীবনীকার রন চেরনোর নতুন গবেষণায় এবার মার্ক টোয়েন, এক কিংবদন্তি সাহিত্যিকের জীবনকথা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ রন চেরনোর নতুন বই আসছে, যেখানে তিনি তুলে ধরেছেন আমেরিকান সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র মার্ক টোয়েনের জীবন ও কর্ম। ‘হ্যামিল্টন’–এর মতো সাড়া জাগানো বইয়ের লেখক চেরনোর এই কাজটি সম্ভবত তাঁর আগের কাজগুলো থেকে ভিন্ন হতে চলেছে। কারণ, এবার তিনি সাহিত্যিক জগতে প্রবেশ করেছেন।

এর আগে তিনি জর্জ ওয়াশিংটন ও ইউলিসিস এস. গ্রান্টের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জীবনী লিখেছেন।

১২০০ পৃষ্ঠার এই জীবনীটির নাম ‘মার্ক টোয়েন’। ২০১৭ সালে গ্রান্টের জীবনী প্রকাশের পর এই প্রথম কোনো বই লিখলেন চেরনো। তবে টোয়েনকে নিয়ে কাজ করার ভাবনা তাঁর অনেক দিনের।

সত্তরের দশকে ফিলাডেলফিয়ায় হ্যাল হলোব্রুকের মঞ্চে টোয়েনকে দেখার পর থেকেই তিনি এই মানুষটির প্রতি আকৃষ্ট হন।

চেরনো মনে করেন, টোয়েন ছিলেন আধুনিক সেলিব্রিটির প্রতিরূপ। টোয়েনকে তিনি শুধু একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে নয়, বরং একজন পণ্ডিত, ব্যক্তিত্ব এবং বক্তা হিসেবেও দেখতে চেয়েছেন।

টোয়েনকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে লেখক হিসেবে নিজের কিছু উপলব্ধির কথাও জানান চেরনো। তিনি বলেন, টোয়েন ছিলেন তাঁর মতোই, যিনি তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর পর একা হয়ে গিয়েছিলেন।

বইটিতে টোয়েনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। লেখক টোয়েনের ব্যবসায়িক ব্যর্থতা এবং তাঁর স্ত্রীর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের বিষয়টিও আলোচনা করেছেন।

বইয়ের শেষ দিকে টোয়েনের কিছু অল্পবয়সী মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে, যাদের টোয়েন ‘অ্যাঞ্জেলফিশ’ ডাকতেন।

চেরনোর মতে, সেই সময়ে টোয়েনের এই আচরণকে একজন প্রিয় ও হাস্যরসিক মানুষের শিশুদের প্রতি দুর্বলতা হিসেবে দেখা হতো। তবে আজকের দিনে সেই একই আচরণকে কিছুটা অস্বাভাবিক ও উদ্বেগের বিষয় হিসেবে মনে করা হয়।

ম্যানহাটনের আপার ওয়েস্ট সাইডের অ্যাপার্টমেন্টে বসে এক সাক্ষাৎকারে চেরনো টোয়েনের পরিবার, রাজনীতি এবং তাঁর ভেতরের গভীর দুঃখগুলো নিয়ে কথা বলেছেন।

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, টোয়েন তৎকালীন রাজনীতিবিদদের, বিশেষ করে থিওডোর রুজভেল্টের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট) ব্যক্তিত্বকে অপছন্দ করতেন। রুজভেল্টকে তিনি আত্ম-প্রচারক ও উদ্ধত হিসেবে দেখতেন।

টোয়েনের ভাষায়, রুজভেল্ট ছিলেন যেন ‘রাজনৈতিক দুনিয়ার টম সয়ার’।

বিখ্যাত ব্যক্তিদের সন্তানদের জীবন প্রায়ই কষ্টের হয়। মার্ক টোয়েনের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। তাঁর এক মেয়ের কথা বলতে গিয়ে চেরনো জানান, মেয়েটি তাঁর বাবার খ্যাতি নিয়ে ঈর্ষান্বিত ছিলেন।

তিনি সবসময় বাবার মনোযোগ নিজের দিকে টানতে চাইতেন।

টয়েন কিভাবে তাঁর জীবন অতিবাহিত করেছেন, সে বিষয়ে আলোকপাত করে চেরনো বলেন, টোয়েন সবসময় সমাজের ধনী ব্যক্তিদের আক্রমণ করতেন, অথচ নিজে তাদের মতোই হতে চাইতেন।

টয়েনের আত্ম-অনুশোচনা এবং ভেতরের দুঃখের কথা উল্লেখ করে চেরনো বলেন, টোয়েন ছিলেন সেইসব হাস্যরসিকদের মতো, যাঁরা হাসির আড়ালে গভীর দুঃখ লুকিয়ে রাখেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *