রিটায়ারমেন্টের সঞ্চয়: রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করা কি বুদ্ধিমানের কাজ?

রিটায়ারমেন্টের জন্য সঞ্চয়: রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের আগে কিছু জরুরি বিষয়

রিটায়ারমেন্টের পর আর্থিক স্বাধীনতা—বিশেষ করে কর বাঁচিয়ে কীভাবে বেশি খরচ করা যায়, সেই পরিকল্পনা করাটা খুবই জরুরি। আপনার সঞ্চয়ের কিছু অংশ যদি করমুক্ত অ্যাকাউন্টে থাকে, তাহলে এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের একটি ব্যবস্থা হলো ‘রথ অ্যাকাউন্ট’-এ (Roth account) আপনার কর-বিলম্বিত সঞ্চয় (যেমন, 401(k) বা ট্র্যাডিশনাল আইআরএ) পরিবর্তন করা। রথ 401(k) এবং রথ আইআরএ-তে জমা হওয়া অর্থ করমুক্তভাবে বাড়ে এবং নির্দিষ্ট সময় পর তোলাও যায়।

এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে, একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। এখানে যে তথ্যগুলো দেওয়া হচ্ছে, তা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মকানুন অনুযায়ী। বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নিয়মকানুন জানতে, একজন অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের মূল ধারণা

রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের মূল সুবিধা হলো, এই অ্যাকাউন্টে আপনার টাকা বাড়ার (growth) ওপর কোনো কর দিতে হয় না। এছাড়াও, এই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার সময়ও কোনো কর দিতে হয় না। তবে এই সুবিধা পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত আছে।

  • আপনার যদি 401(k) বা ট্র্যাডিশনাল আইআরএ-এর মতো কর-বিলম্বিত সঞ্চয় থাকে, তাহলে আপনি সেটিকে রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করতে পারেন।
  • টাকা পরিবর্তনের সময়, আপনাকে সেই অর্থের ওপর কর দিতে হবে।
  • টাকা রথ অ্যাকাউন্টে জমা করার পর, সেটি অন্তত পাঁচ বছর পর্যন্ত রাখতে হবে।

রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে।

১. বর্তমানে আপনার আয় কেমন?

যদি আপনার বর্তমান আয় বেশি হয়, তাহলে এখনই রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করা লাভজনক হতে পারে। কারণ, পরিবর্তনের সময় আপনাকে যে কর দিতে হবে, তা হয়তো তুলনামূলকভাবে কম হবে।

২. পরিবর্তনের জন্য কর দেওয়ার মতো যথেষ্ট টাকা আছে কি?

রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের ফলে যে কর দিতে হবে, সেই টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য আপনার থাকতে হবে। অন্য কোনো বিনিয়োগ ভেঙে বা ঋণ করে এই কর পরিশোধ করা উচিত নয়।

৩. ভবিষ্যতে আপনার করের হার কেমন হবে?

ভবিষ্যতে আপনার করের হার বাড়বে নাকি কমবে, সেই বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে। যদি মনে হয়, ভবিষ্যতে আপনার করের হার বাড়তে পারে, তাহলে এখনই রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করা ভালো।

৪. বাজারের অবস্থা কেমন?

শেয়ার বাজার বা অন্যান্য বিনিয়োগের বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। বাজার যখন খারাপ থাকে, তখন পরিবর্তন করলে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। কারণ, কম দামে সম্পদ কিনে, ভবিষ্যতে তার থেকে বেশি লাভ করা যেতে পারে।

৫. অবসরকালে আয়ের উৎস কী হবে?

অবসরকালে আপনার আয়ের উৎসগুলো কী হবে, তা বিবেচনা করা জরুরি। আপনার যদি পেনশনের পাশাপাশি অন্যান্য করযোগ্য আয় থাকে, তাহলে রথ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা আপনার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

৬. উত্তরাধিকার পরিকল্পনা

উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে রথ অ্যাকাউন্টের কিছু বিশেষ সুবিধা রয়েছে। আপনার মৃত্যুর পর, আপনার উত্তরাধিকারীরা এই অ্যাকাউন্টের টাকা করমুক্তভাবে পেতে পারেন এবং তাঁদের নিয়মিত কোনো বিতরণীর (distribution) প্রয়োজন হয় না।

উপসংহার

রথ অ্যাকাউন্টে পরিবর্তনের বিষয়টি একটি জটিল বিষয়। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, একজন অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। তিনি আপনার আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ এবং কর সংক্রান্ত নিয়মকানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে একজন স্থানীয় আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *