ন্যাটো জোটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে মিত্র দেশগুলোকে আশ্বস্ত করতে ব্রাসেলসে গেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ন্যাটোতে নিযুক্ত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ম্যাট হুইটেকার এই উদ্দেশ্যে জোটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
খবর অনুযায়ী, অনেক সহযোগী দেশ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের কারণে উদ্বিগ্ন, যেখানে তিনি ন্যাটোর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর প্রতি আগের মতোই সক্রিয় রয়েছে। ন্যাটোর বিষয়ে গণমাধ্যম এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অভ্যন্তরীণ মহলে যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, তা ভিত্তিহীন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাটোকে সমর্থন করেন এবং আমরা জোটের সঙ্গে থাকব। আমরা ন্যাটোকে আরও শক্তিশালী এবং দৃশ্যমান করতে চাই।”
অন্যদিকে, রাষ্ট্রদূত হুইটেকার এক বিবৃতিতে জানান, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে ন্যাটো আগের চেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকর হবে। আমি বিশ্বাস করি, একটি শক্তিশালী ন্যাটো শান্তি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে ন্যাটোর কার্যকারিতা নির্ভর করে প্রতিটি সদস্য দেশের অংশগ্রহণের ওপর।”
তবে, ট্রাম্পের রাশিয়া এবং ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব এবং মিত্র দেশগুলোর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের কারণে ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন। উপরন্তু, সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের এই আশ্বাসের পরেও ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে। ইউরোপীয় মিত্ররা জানতে চাইছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা কত দ্রুত বাস্তবায়িত হতে পারে।
নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র আশা করে ইউরোপীয় মিত্ররা তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আরও বেশি দায়িত্ব নেবে। এর অর্থ হলো, ইউরোপীয় ন্যাটো দেশগুলোকে দ্রুত ন্যাটো জোটের ইউরোপীয় স্তম্ভকে শক্তিশালী করতে হবে এবং প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে হবে।”
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ন্যাটো সদস্য দেশগুলো তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে। এখন তারা চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহায়তা কমিয়ে দিলেও, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হতে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গত মাসে জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা অগ্রাধিকার এখন এশিয়া এবং নিজেদের সীমান্ত অঞ্চলে। এরপর থেকেই ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন যে, ইউরোপ থেকে কত দ্রুত মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
ইউরোপ ও কানাডার সরকারগুলো এখন “দায়িত্ব ভাগাভাগি” করার পরিকল্পনা তৈরি করছে, যাতে মার্কিন সেনা ও সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হলেও নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি না হয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস