বিশ্বকাপে ধরাশায়ী! শীর্ষ দলগুলোর এমন পরিণতি কেন?

খেলাধুলার বিশ্ব মঞ্চে রাগবি বিশ্বকাপের আসর বসানো নিয়ে এখন চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। একদিকে যেমন টুর্নামেন্টটির আকর্ষণ বাড়ছে, তেমনি এর আয়োজন করাটা অনেক দেশের জন্যই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশেষ করে শীর্ষস্থানীয় রাগবি খেলুড়ে দেশগুলো, যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের মতো দেশগুলো এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

আসন্ন ২০৩৫ এবং ২০৩৯ সালের রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করা হচ্ছে। স্পেন এবং ইতালির মতো দেশগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে, আবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও আলোচনায় রয়েছে।

এর মধ্যে, খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকা সম্ভবত এই দুটি আসরের কোনোটির আয়োজক হতে চাইছে না। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে দেশের ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার রাগবি ফেডারেশনের প্রধান মার্ক আলেকজান্ডারের মতে, একটি তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে তাদের অর্থনীতি এখনো শক্তিশালী নয়। খেলাটির সামাজিক গুরুত্ব থাকলেও, বিশ্বকাপ আয়োজনের আর্থিক বোঝা সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন হবে।

অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের মতো দল, যারা অতীতে বিশ্বকাপ জিতেছে, তারাও এখন অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান। আয়ারল্যান্ডও ২০১৯ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চেয়েছিল, কিন্তু সফল হয়নি।

আয়োজক দেশ নির্বাচন এবং টুর্নামেন্ট থেকে লাভের হিসাব মেলাতে গিয়ে অনেক সময় জটিলতা দেখা যায়। যেমন, ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে ফ্রান্স প্রায় ১৩ মিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন বাংলাদেশি টাকা) ক্ষতির শিকার হয়েছিল।

যদিও টুর্নামেন্টটি আয়োজক সংস্থা, ওয়ার্ল্ড রাগবি-এর জন্য ৫০০ মিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ৬ হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা) রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব তৈরি করেছিল।

বিষয়টি নিয়ে রাগবি ইউনিয়নগুলোর মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। তাদের অভিযোগ, বিশ্বকাপের আয়োজনে প্রচুর অর্থ খরচ হয়, কিন্তু সেই তুলনায় তারা খুব সামান্যই লাভ পায়।

তাদের মতে, ওয়ার্ল্ড রাগবি খেলাটির বিশ্বব্যাপী প্রসারের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করতে চায়, কিন্তু এর ফলে শীর্ষস্থানীয় দলগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড রাগবি এখন নতুন বাজার খুঁজছে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ২০২৯ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যেও টুর্নামেন্ট আয়োজনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

তবে, মধ্যপ্রাচ্যে খেলাটি আয়োজন করাটা সহজ হবে না, কারণ সেখানকার আবহাওয়া এবং অন্যান্য লজিস্টিক সমস্যা রয়েছে।

রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের এই জটিল পরিস্থিতি খেলাধুলাপ্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একদিকে যেমন খেলাটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে, তেমনি এর অর্থনৈতিক দিকগুলোও বিশেষভাবে বিবেচনার দাবি রাখে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *