ম্যারাথন দৌড়ের পর হালকা শরীরচর্চা করতে গিয়ে এক অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার শিকার হন কাইয়া মোচিটানি। তিনি ভেবেছিলেন, দৌড়টা ভালোই কাটবে। কিন্তু রাস্তার পাশে একটি গাড়ির ধাক্কায় তিনি আহত হন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, তিনি ঘটনার পর দৌড় থামাননি, বরং দৌড়ানো চালিয়ে যান! সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর এই ঘটনার ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাইয়া জানান, তিনি যখন দৌড়াচ্ছিলেন, তখন রাস্তার মোড়ে একটি গাড়ি লাল বাতি থাকা সত্ত্বেও ডানে ঘুরছিল। গাড়িটি তাকে ধাক্কা দেয়, তবে তিনি সঙ্গে সঙ্গে থামেননি।
বরং হতভম্ব হয়ে তিনি দৌড়াতে শুরু করেন। পরে তিনি নিজের এই আচরণের কারণ অনুসন্ধান করতে শুরু করেন।
ভিডিওতে তিনি জানান, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি কী করবেন। ধাক্কা লাগার পর তার মাথায় প্রথম যে চিন্তা এসেছিল, তা হলো দৌড়ে পালানো। এরপর তিনি প্রায় পাঁচ মাইল দৌড়ে যান।
পরে তিনি যখন তার বাবা ও বাগদত্তকে বিষয়টি জানান, তখন তারা অবাক হয়ে যান এবং জানতে চান কেন তিনি তখন থামেননি।
কাইয়া মোচিটানির মতে, আঘাত পাওয়ার পর তিনি সম্ভবত মানসিক আঘাতের শিকার হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আঘাত পাওয়ার পর তার শরীর ভালো মতো সাড়া দিচ্ছিল না। বিশেষ করে, হিপের ( নিতম্ব ) দিকে খুব ব্যথা ছিল।
কিন্তু এরপরও তিনি দৌড় থামাননি। ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে অনেকে তার এই আচরণের সমালোচনা করেন। কেউ কেউ তাকে ‘সংঘাত এড়িয়ে চলা’ এবং ‘অন্যকে খুশি করতে চাওয়া’র মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে তুলনা করেন।
এই ঘটনার পর কাইয়া নিজের ভেতরের দুর্বলতাগুলো নতুন করে উপলব্ধি করতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন, তিনি সবসময় কঠিন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলেন এবং নিজের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হতে দ্বিধা বোধ করেন।
কাইয়া জানান, তিনি সবসময় চাইতেন, মানুষ যেন তাকে ভালোবাসে এবং তার কোনো ক্ষতি না করে।
তবে এই ঘটনার পর তিনি নিজের ভয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যে রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন, সেই পথেই আবার দৌড়ানোর পরিকল্পনা করেন।
তিনি বলেন, প্রথমে তার মনে হয়েছিল, ওই রাস্তায় আর কখনো দৌড়ানো উচিত হবে না। কিন্তু পরে তিনি তার যুক্তিকে কাজে লাগান এবং পুরনো পথেই দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
কাইয়া মোচিটানি বলেন, দৌড় তার কাছে নিছক শরীরচর্চা নয়, বরং এটি মানসিক শান্তির একটি উপায়। তিনি বলেন, দৌড় তাকে জীবনের কঠিন পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।
তিনি চান, মানুষ যেন নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং কোনো পরিস্থিতিতে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়, সে বিষয়ে সচেতন থাকে।
এই ঘটনার মাধ্যমে কাইয়া বুঝিয়ে দিয়েছেন, জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, তা সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিজস্ব অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল।
তথ্য সূত্র: পিপল