দৌড়বিদের নজরে কাপের পাহাড়, অতঃপর পরিবেশের জন্য যুগান্তকারী আবিষ্কার!

শিরোনাম: দৌড় প্রতিযোগিতায় বর্জ্য কমাতে অভিনব উপায়, সিলিকন কাপের হাত ধরে পরিবেশ সুরক্ষার দিশা

বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ দূষণ একটি গুরুতর সমস্যা। প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে পরিবেশের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন মার্কিন উদ্যোক্তা ক্রিস্টিনা স্মিথ। তিনি দৌড় প্রতিযোগিতার মতো জনবহুল অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হওয়া একবার ব্যবহারযোগ্য কাগজের কাপের পরিবর্তে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সিলিকন কাপ ব্যবহারের ধারণা নিয়ে এসেছেন।

সিলিকন কাপ আবিষ্কারের পেছনের গল্প

২০১৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়া আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে দৌড়বিদ হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন ক্রিস্টিনা স্মিথ। সেই দৌড়ের সময় তিনি খেয়াল করেন, প্রচুর পরিমাণে একবার ব্যবহারযোগ্য কাপ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

এই চিন্তা থেকেই তিনি এমন একটি কাপ তৈরির কথা ভাবেন যা বারবার ব্যবহার করা যাবে। এরপর তিনি ‘হিকআপ আর্থ’ নামে একটি কোম্পানি তৈরি করেন এবং সেখানে এই ধরনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাপ তৈরি শুরু করেন।

হিকআপ কাপ: পরিবেশবান্ধব এক সমাধান

ক্রিস্টিনা স্মিথের তৈরি করা সিলিকন কাপগুলো হালকা ও নমনীয়। বর্তমানে তার কোম্পানির ৭০,০০০ এর বেশি কাপ রয়েছে, যা তিনি বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য ভাড়া দেন।

এই কাপগুলো পরিষ্কার করার জন্য তিনি বিশেষ ধরনের ডিশওয়াশার ব্যবহার করেন। একটি উদাহরণ হিসেবে, গত মে মাসে মিনিয়াপলিস এবং সেন্ট পল-এ অনুষ্ঠিত ‘PNC Women Run the Cities’ প্রতিযোগিতায় কয়েক হাজার দৌড়বিদের জন্য এই কাপ ব্যবহার করা হয়েছিল।

দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই: কিভাবে কাজ করে হিকআপ?

সাধারণত, বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রচুর পরিমাণে কাগজের কাপ ব্যবহার করা হয়। এই কাপগুলো তৈরি করা এবং ব্যবহারের পর তা ফেলে দেওয়ার ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।

একবার ব্যবহারযোগ্য কাপগুলো হয়তো প্লাস্টিকের তৈরি, অথবা কাগজের হলেও এর ভেতরে প্লাস্টিকের আস্তরণ থাকে, যা সহজে পচে না। ফলে এগুলো বছরের পর বছর ধরে পরিবেশের ক্ষতি করে।

ক্রিস্টিনা স্মিথের এই উদ্ভাবন একবার ব্যবহারযোগ্য কাপের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে।

খরচ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

পুনরায় ব্যবহারযোগ্য কাপের ভাড়ার খরচ, একবার ব্যবহারযোগ্য কাপের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে, এর মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

পরিবেশবিদরা মনে করেন, এই ধরনের উদ্ভাবন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের মতে, এই ধরনের সমাধানগুলো বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়া গেলে পরিবেশ সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধারণার প্রাসঙ্গিকতা

বাংলাদেশেও বিভিন্ন খেলাধুলা ও জনসমাগমে প্রচুর বর্জ্য তৈরি হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও কাগজের কাপের ব্যবহার একটি সাধারণ চিত্র।

ক্রিস্টিনা স্মিথের এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। স্থানীয় উদ্যোক্তারাও এই ধরনের পরিবেশবান্ধব সমাধান নিয়ে কাজ করতে পারেন।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *