জাপানে ভাল্লুকের সঙ্গে লড়াই! ‘এক কামড়েই হাত শেষ’

জাপানের একটি বনে দৌড়ানোর সময় এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন বিলি হ্যালোরান নামের এক দৌড়বিদ।

অক্টোবরের শুরুতে মিয়োকো এলাকার জঙ্গলে নিয়মিত দৌড়ানোর সময় দুটি এশীয় কালো ভালুকের মুখোমুখি হন তিনি। মুহূর্তেই বিপদ বুঝতে পারেন হ্যালোরান।

জাপানে ভালুকের আক্রমণের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন এবং অন্তত সাত জন নিহত হয়েছেন।

২০০৬ সাল থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। হ্যালোরান যেখানে দৌড়াচ্ছিলেন, তাঁর খুব কাছেই কিছুদিন আগে একটি মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছিল।

পরিস্থিতি এতটাই দ্রুত ঘটেছিল যে, আত্মরক্ষার কোনো সুযোগ পাননি হ্যালোরান।

প্রথমে ভালুক দুটিকে দেখে তিনি ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

কিন্তু একটি ভালুক তাঁর দিকে তেড়ে আসে। হ্যালোরান জানান, ভালুকটি তাঁর মতোই লম্বা ছিল এবং ওজন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোগ্রামের মতো হবে।

পালানোর চেষ্টা না করে চিৎকার করে ভালুকটিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ভালুকটি তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

আত্মরক্ষার জন্য তিনি যখন তাঁর হাতটি মুখের সামনে ধরেন, ভালুকটি তাঁর হাতে কামড় বসায় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান।

এর পরেই ভালুকটি তাঁর পায়ে আঁচড় কাটে।

ভাগ্যক্রমে, ভালুকটি কিছুক্ষণের মধ্যেই পিছু হটে।

ততক্ষণে হ্যালোরান মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁর হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং হাড়ের কিছু অংশ প্রতিস্থাপনের জন্য হিপ গ্রাফটিং করা হয়েছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুস্থ হতে হ্যালোরানের বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে।

এর মধ্যে শারীরিক পুনর্বাসনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অতিমারীর কারণে দীর্ঘকাল ধরে দৌড় বন্ধ থাকার পর, আবার দৌড়ানোর পরিকল্পনা করছিলেন তিনি।

তবে এই ঘটনার পর আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফেরা তাঁর জন্য কঠিন হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভালুকেরা খাদ্য সংকটে ভুগছে।

ফলে তারা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

সম্প্রতি ভালুকের আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে জাপানি সরকার ভালুক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা ভালুক তাড়ানোর জন্য ঘণ্টা বাজানো বা গান বাজানোর মতো বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

হ্যালোরান জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি ভালুক তাড়ানোর স্প্রে সাথে নিয়ে দৌড়ানোর কথা ভাবছেন।

তবে তিনি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক।

শীতকালে সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার স্নোবোর্ডিং করতে চান এবং প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চান।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *