সামরিক হুমকি! তেলের ‘ছায়া বহর’ বাঁচাতে রাশিয়ার পদক্ষেপ, চাঞ্চল্যকর তথ্য!

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান: বাল্টিক সাগরে উত্তেজনার পারদ, পশ্চিমাদের উদ্বেগে ছায়া-বহর।

গত সপ্তাহে বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমানের তৎপরতা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, রুশ যুদ্ধবিমানটি পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা একটি তেলের ট্যাংকারকে নিরাপত্তা দিতে এসেছিল। এ ঘটনায় ক্রেমলিনের সঙ্গে ‘ছায়া বহর’-এর যোগসূত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, ১৩ই মে তারিখে তারা ‘জাগুয়ার’ নামের একটি ট্যাংকারের ওপর নজরদারি করতে গেলে রুশ এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমানটি এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। পরে এস্তোনীয় সামরিক বাহিনী জাহাজটিকে তাদের জলসীমা থেকে বের করে দেয়।

এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গাস স্যাকনা তুরস্কের একটি ন্যাটো বৈঠকে সাংবাদিকদের বলেন, “এটি একটি নতুন ঘটনা। এর মাধ্যমে রাশিয়া সরাসরি ‘ছায়া বহর’-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক স্থাপন করল।”

এই ‘ছায়া বহর’ মূলত রাশিয়ার তেল পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত জাহাজগুলোর একটি গোপন নেটওয়ার্ক, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিতে ব্যবহৃত হয়। পুরনো ও দুর্বল অবস্থায় থাকা এসব জাহাজের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়েরও আশঙ্কা রয়েছে। ধারণা করা হয়, এর সঙ্গে জড়িত জাহাজগুলোর সংখ্যা কয়েকশ’।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা, রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (আরইউএসআই) এক গবেষক সিএনএনকে জানিয়েছেন, “মনে হচ্ছে ক্রেমলিন তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে।”

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নল বারোত তুরস্কের ওই বৈঠকে বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার এমন সামরিক পদক্ষেপ ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলে উদ্বেগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে, এস্তোনিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের জলসীমায় জাহাজের ওপর নজরদারি ও নিষেধাজ্ঞা জোরদার করা হবে। একইসঙ্গে, ন্যাটোও বাল্টিক সাগরে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে।

জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তুরস্কের বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মের্জ আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হবে ‘ছায়া বহর’ – বিশেষ করে বাল্টিক সাগরে চলাচল করা প্রায় ৩০০টি জাহাজ।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে, রাশিয়া গ্রিক মালিকানাধীন ‘গ্রিন অ্যাডমায়ার’ নামের একটি তেল ট্যাংকার আটক করেছে। জাহাজটি এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড ও রাশিয়ার মধ্যে নির্ধারিত পথে যাচ্ছিল।

এস্তোনিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাস থেকে দেশটির জলসীমায় ৪৫০টির বেশি জাহাজের ওপর তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ফিনল্যান্ড উপসাগরও রয়েছে, যা রাশিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *