যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন হামলা, কিয়েভে নিহত ১।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রোববার ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এ কথা জানিয়েছে। কিয়েভ সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে চালানো হামলায় একজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও কয়েকজন।
খবর অনুযায়ী, শুক্রবার কিয়েভের সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি শান্তি আলোচনা চলার মধ্যেই এই হামলা চালানো হয়।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া এক রাতে ২৭৩টি শাহেদ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল কিয়েভ অঞ্চল। কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর মিকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, হামলায় একজন ২৮ বছর বয়সী নারী নিহত হয়েছেন এবং চার বছর বয়সী একটি শিশুসহ আরও তিনজন আহত হয়েছে।
রাজধানী কিয়েভে প্রায় নয় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সাইরেন বাজতে শোনা গেছে। ইউক্রেনের পার্লামেন্টের প্রধান রুসলান স্টেফানчук এক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “এটি হলো শান্তির প্রতি পুতিনের আন্তরিক ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ।
হামলায় আবাসিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগেছে এবং গ্যারেজগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্টেফানচুক আরও যোগ করেছেন, “এটা সবচেয়ে জঘন্য সন্ত্রাস।”
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, “ব্যাপক হামলায়” বেশ কয়েকটি স্থানে আগুন লেগেছে এবং ৫ কর্মী সেখানে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, শনিবার রাশিয়ার গোলাবর্ষণে ডনেৎস্ক অঞ্চলে একজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনের প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন। এছাড়া, রুশ ড্রোনগুলো খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলকেও লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়া ইউক্রেনের ৭৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে তারা এ খবর প্রকাশ করেছে।
সর্বশেষ এই হামলার আগে, শনিবার ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমি অঞ্চলের একটি বাসে ড্রোন হামলায় অন্তত নয়জন নিহত এবং সাতজন আহত হয়। উল্লেখ্য, রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশই যুদ্ধের শুরু থেকে সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য মিলিত হয়েছিল।
তুরস্কে অনুষ্ঠিত আলোচনা কোনো উল্লেখযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। দেশ দুটি তাদের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে একটি সম্ভাব্য বৈঠক, যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে আলোচনা করেছে। তবে, কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।
আলোচনার সময় রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে তাদের নিয়ন্ত্রিত কিছু এলাকা ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায়, যা কিয়েভ দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং পোল্যান্ডের নেতারা রাশিয়ার এই অবস্থানকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কথা বলতে পারেন বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, তিনি মনে করেন সরাসরি পুতিনের সঙ্গে কথা না বললে শান্তি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে না।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শনিবার নিশ্চিত করেছেন যে, দুই নেতার মধ্যে একটি ফোন কথোপকথনের প্রস্তুতি চলছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন