ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, সাহায্যের হাত বাড়াল রাশিয়া
ইরানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর, শহীদ রাজায়েতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৮ জন নিহত এবং ১,০০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এই ঘটনার পরপরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরানকে জরুরি সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দেন।
রাশিয়া দ্রুত অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ জরুরি সাহায্য বিমান পাঠিয়েছে।
পারস্য উপসাগরের প্রবেশদ্বার খ্যাত হরমুজ প্রণালীর কাছের এই বন্দরটি ইরানের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিস্ফোরণের পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে সেখানে আগুন জ্বলছিল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবর অনুযায়ী, বন্দরটির কাছাকাছি অবস্থিত বান্দার আব্বাস শহরের স্কুল ও অফিসগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাসিন্দাদের বাইরে যেতে নিষেধ করেছে এবং মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই বিস্ফোরণটি একটি দুর্ঘটনা। তবে তেহরানের প্রসিকিউটর অফিস বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, কারণ তারা এই বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা অথবা সেনাবাহিনীর ভুলের ফল হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছিল।
ইরানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কন্টেইনারে আগুন লাগে এবং তা দ্রুত অন্যান্য কন্টেইনারে ছড়িয়ে পরে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে এবং ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়।
বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ছোটখাটো কিছু দুর্ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার তৃতীয় দফা শুরু হয়েছে। ওমানের মধ্যস্থতায় মাস্কাটে অনুষ্ঠিত হওয়া এই আলোচনাকে ইরান ‘গুরুত্বপূর্ণ, বাস্তবসম্মত এবং বিস্তারিত’ বলে বর্ণনা করেছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার পরবর্তী দফা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, রাশিয়া ইরানের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে এবং হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। একইসাথে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্রে এই ধরনের দুর্ঘটনার কারণে বিশ্ববাজারে এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান