ইউক্রেনে হামলা: আলোচনার মধ্যেই ৫ জন নিহত করলো রাশিয়া!

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখনো চলছে, যার মধ্যে দেশটির বিভিন্ন শহরে বোমা হামলা ও ড্রোন ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন দূত, স্টিভ উইটকফ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো পৌঁছেছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে রাশিয়ার চালানো ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলের শিল্প শহর পাভলোহরাদে তিনজন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন শিশুও ছিল। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, এই হামলায় একটি পাঁচতলা ভবনে ১৪ জন আহত হয়েছে।

আহতদের মধ্যে ছয় বছর বয়সী একটি শিশু ও ১৫ এবং ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীও রয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই দিন, ডনেৎস্ক অঞ্চলের ইয়ারোভা গ্রামে আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় আরও দুইজন নিহত হয়।

ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া শুক্রবার রাতে ইউক্রেনজুড়ে ১০৩টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার ফলে পাঁচটি অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ডিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে ১১টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।

এদিকে, কিয়েভ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক জেইন বাসরাভি জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয়রা উইটকফের সঙ্গে পুতিনের এই বৈঠকটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে না। তাদের মতে, উইটকফ এবং এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পও রাশিয়ার প্রচারণা চালাচ্ছেন।

ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলো, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর দেশগুলো মনে করে, যুদ্ধবিরতি ছাড়া এবং শহরগুলোতে বোমা হামলা অব্যাহত থাকলে কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না।

ইউক্রেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, তারা তাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে এবং রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করতে চায়। ইউক্রেন, রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার মার্কিন প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৃহস্পতিবার জানান, ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি আলোচনা সঠিক দিকে এগোচ্ছে, তবে কিছু বিষয় এখনো চূড়ান্ত করতে হবে।

আসন্ন সিবিএস নিউজের একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের মন্তব্য প্রসঙ্গে লাভরভ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মনে করেন—এবং আমি মনে করি তিনি সঠিক—আমরা সঠিক দিকেই যাচ্ছি।

বিদেশনীতি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘ইউক্রেনীয় প্রিজম’-এর পরিচালক হান্না শেলিস্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনের অবস্থান স্পষ্ট। তিনি বলেন, “এটি দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কোনো জোটে যোগ দেবে, তা কেউ ঠিক করে দেবে না।

বিশেষ করে, যখন কেউ আমাদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত নয়, তখন এটি খুবই স্বাভাবিক।” শেলিস্ট আরও উল্লেখ করেন, ইউক্রেন একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের চেষ্টা করছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *