যুদ্ধবিরতির ঘোষণা, কিন্তু থামেনি লড়াই? রাশিয়া-ইউক্রেন মুখোমুখি!

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরেই তা লঙ্ঘনের অভিযোগ, উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।

ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ (ceasefire) ঘোষণা করেন। শনিবার (৪ মে) এই ঘোষণা আসে, যেখানে যুদ্ধবিরতির সময়সীমা ছিল প্রায় ৩০ ঘণ্টা।

কিন্তু ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকেই রাশিয়ান বাহিনী তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে শোনা গেছে সাইরেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া আসলে একটি জনসংযোগের কৌশল হিসেবে এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার (৫ মে) এক বিবৃতিতে জানায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী যুদ্ধবিরতি ভেঙে রাশিয়ার বিভিন্ন অবস্থানে ১ হাজারের বেশি বার হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ব্রায়ানস্ক, কুর্স্ক এবং বেলগোরোদ সীমান্ত অঞ্চলে ইউক্রেনীয় হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষতি হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন শোনা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা রাশিয়ার এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

তাদের মতে, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা অব্যাহত ছিল, যা যুদ্ধবিরতির ধারণাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এই বিষয়ে ইউক্রেনীয় সামরিক মুখপাত্র ভিক্টর ত্রেখুবভ জানান, যুদ্ধ কিছুটা কমলেও, তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, উভয়পক্ষের মধ্যে গভীর আস্থার অভাবের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সব ধরনের যুদ্ধ বন্ধ করা কঠিন। তবে, বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত এবং হামলার সংখ্যাও কমেছে।

রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেছেন, যদি উভয়পক্ষই যুদ্ধ বন্ধ করতে কঠিন শর্ত দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ফলে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হলেও, তা কতটুকু সফল হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস এখনো বিদ্যমান।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *