ট্রাম্পের সময়সীমা: ইউক্রেনকে দুর্বল করতে রাশিয়ার নতুন ফন্দি!

ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়া কি ট্রাম্পের সময়কালের সুযোগ নিতে চাইছে?

ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও চলছে, এবং রাশিয়া সম্ভবত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় মেয়াদের দিকে তাকিয়ে কৌশল পরিবর্তন করতে পারে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন, যেখানে তিনি ইউক্রেনে শান্তি চুক্তি করতে অথবা দেশটির উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলেছেন।

এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেনকে দুর্বল করতে এবং তাদের ভূখণ্ড দখলের প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করতে চাইছে।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে তাদের আক্রমণ তীব্র করেছে। তারা ডনবাস অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর, যেমন- পোক্রোভস্ক ও কন্সতান্তিনিভকা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এই শহরগুলো দখল করতে পারলে রাশিয়ার সেনারা স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কের দিকে অগ্রসর হতে পারবে, যা পুরো দনেৎস্ক অঞ্চল দখলের পথ খুলে দেবে।

এছাড়াও, তারা খারকিভ ও সুমি অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।

তবে, ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতিরোধের মুখে রাশিয়ার দ্রুত জয়লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী তাদের দুর্বল জনবল এবং অস্ত্রের ঘাটতি সত্ত্বেও ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ব্যাহত করছে।

রাশিয়া যদিও “হাজারো ক্ষত” নামে পরিচিত একটি কৌশল অবলম্বন করছে, যেখানে তারা সম্মুখ সারিতে চাপ সৃষ্টি করে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো ইউক্রেনকে দুর্বল করে দেওয়া, যেন তারা আলোচনার টেবিলে আসতে বাধ্য হয়।

অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় দেশটির সেনারা বেশ অসুবিধায় পড়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা সময়মতো না আসায় ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গোলাবারুদ এবং সামরিক অভিযান সীমিত করতে হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে, তবে দ্রুত সহায়তা না পেলে রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া সম্ভবত আলোচনায় সুবিধা পাওয়ার জন্য সুমি ও খারকিভ অঞ্চলে তাদের অবস্থানকে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তারা এই অঞ্চলে কিছু ভূখণ্ডের বিনিময়ে দনেৎস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ নিজেদের দখলে নিতে চাইতে পারে।

যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হচ্ছে। খাদ্যশস্যের দাম বাড়ছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ। এছাড়া, এই যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

সব মিলিয়ে, ইউক্রেন যুদ্ধ একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। রাশিয়ার সামরিক কৌশল, ইউক্রেনের প্রতিরোধ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনের ওপর যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *