ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত খারকিভ ও সুমি শহরে সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় অন্তত ২ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবার সকালের এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
এই ঘটনার জেরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতেও দেখা যাচ্ছে ভিন্ন মেরুকরণ।
**হামলার চিত্র**
খারকিভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানে, এতে একজন নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।
খারকিভের মেয়র ইগর তেরেখভের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হামলায় ১৫টি আবাসিক ভবন, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া, প্রতিবেশী শহর সুমিতে একটি বেকারিকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়, যেখানে ইস্টার কেক তৈরি করা হচ্ছিল।
এতে অন্তত একজন নিহত এবং আরও একজন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ভোর ৫টার দিকে যখন কারফিউ শেষ হওয়ার পরে স্বাভাবিক জীবন শুরু হওয়ার কথা, তখনই এই হামলাগুলো চালানো হয়।
এই হামলায় আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক এলাকা, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
**অন্যান্য শহরের ওপর আঘাত**
শুধু খারকিভ ও সুমি নয়, রাশিয়া লভিভ, ডিনিপ্রো, মাইকোলাইভ এবং কিয়েভ শহরেও হামলা চালিয়েছে।
ডিনিপ্রোতে একটি জিম, হোটেল এবং অফিস ব্লকের মতো বাণিজ্যিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেখানে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এরই মধ্যে রাশিয়ার ছোড়া তিনটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় দুই ডজনের বেশি ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে জানা গেছে।
**রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া**
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানান, রাশিয়া তাদের কৌশল পরিবর্তন করে এখন বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে চীন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আছে যে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছে।’ তবে তিনি বিস্তারিত জানাননি।
অন্যদিকে, রাশিয়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, জার্মানি যদি ইউক্রেনকে তাদের তৈরি ‘টরাস’ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে, তাহলে তা হবে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’।
জাতিসংঘের এক বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘জার্মানির এমন পদক্ষেপ সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানেনি।
অন্যদিকে, চীন ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তারা বরাবরই বলে আসছে, তারা এই সংঘাতে কোনোভাবে জড়িত নয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমর্থন করে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা