পোল্যান্ড ও বাল্টিককে ধ্বংসের হুমকি রুশ গোয়েন্দা প্রধানের!

রাশিয়ার গোয়েন্দা প্রধানের হুঁশিয়ারি: পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে আক্রমণের হুমকি।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা প্রধান সের্গেই নারিশকিন পোল্যান্ড এবং বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে সরাসরি আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। ন্যাটোর (NATO) সম্ভাব্য আগ্রাসনের জবাবে এই দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার কথা তিনি জানান।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে নারিশকিন বলেন, উত্তর আটলান্টিক সামরিক জোট যদি রাশিয়া বা বেলারুশের উপর কোনো ধরনের আঘাত হানে, তাহলে পুরো সামরিক জোটের ক্ষতি হবে। তবে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া এবং এস্তোনিয়া সবার আগে এর শিকার হবে।

এই মন্তব্যের মাধ্যমে নারিশকিন মূলত এমন একটি ধারণাকে সমর্থন যোগাচ্ছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষে যদি রাশিয়া তার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে তারা সাবেক সোভিয়েত প্রভাবাধীন দেশগুলোর দিকে নজর দেবে। নারিশকিন এর জন্য রাশিয়া ও বেলারুশের সীমান্তের কাছে ন্যাটোর সামরিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন।

তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, পোল্যান্ড এবং বাল্টিক দেশগুলো, বিশেষ করে কথার মাধ্যমে হলেও, আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে এবং ক্রমাগত অস্ত্র প্রদর্শন করছে। নারিশকিন বলেন, “তাদের বোঝা উচিত, যদিও তারা এখনো বুঝতে পারছে না, যে ন্যাটোর পক্ষ থেকে যদি ‘ইউনিয়ন স্টেট’-এর (রাশিয়া ও বেলারুশ) বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালানো হয়, তবে পুরো ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে পোল্যান্ড এবং বাল্টিক দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্বেরাই সবার আগে এর ফল ভোগ করবে।”

রাশিয়ান গোয়েন্দা প্রধান আরও উল্লেখ করেন, পোল্যান্ড সম্প্রতি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মাসে ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য ফ্রান্সের পারমাণবিক সুরক্ষা বিস্তারের প্রস্তাব করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা বলেছিলেন, এমন পদক্ষেপ পোল্যান্ডের নিরাপত্তার জন্য উপকারী হবে।

এছাড়াও, নারিশকিন অভিযোগ করেন, পোল্যান্ড বেলারুশ এবং কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের সীমান্তে প্রায় ২০ লক্ষ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে আগ্রাসনের আশঙ্কা করে পোল্যান্ড এবং বাল্টিক দেশগুলো গত মাসেই ভূমি মাইন নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘অটোয়া কনভেনশন’ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়।

সাক্ষাৎকারে নারিশকিন ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার কৌশলগত লক্ষ্যগুলো পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, রাশিয়া চায় না ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকুক এবং তারা দেশটির “সামরিকীকরণ ও নাৎসিমুক্ত” করতে চায়।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে, তখন রাশিয়াকে আঞ্চলিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড় দেওয়া হতে পারে।

তাদের মতে, এটি রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরও উৎসাহিত করবে এবং তারা পুনরায় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ইউরোপের দিকে আরও আগ্রাসী হতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *