যুদ্ধবিধ্বস্ত কঙ্গো নিয়ে মতবিরোধের জেরে বেলজিয়ামের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলো রুয়ান্ডা। সোমবার রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা অবিলম্বে বেলজিয়ামের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দেশটির সকল কূটনীতিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রুয়ান্ডা ত্যাগ করতে বলেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায়, বেলজিয়ামও তাদের দেশের রুয়ান্ডান কূটনীতিকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের (Paul Kagame) অভিযোগ, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (Democratic Republic of Congo – DRC) পূর্বাঞ্চলে চলমান সংঘাতে বেলজিয়াম ক্রমাগতভাবে কিগালিকে (Kigali) হেয় করছে। রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ (M23) বিদ্রোহী গোষ্ঠী কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে আক্রমণ শুরু করার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
জাতিসংঘ (United Nations) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এম২৩ গোষ্ঠীর উপর রুয়ান্ডার কার্যত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং কঙ্গোতে প্রায় ৪,০০০ রুয়ান্ডান সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও রুয়ান্ডা কঙ্গোর সংঘাতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রিভো (Maxime Prevot) এক টুইটে রুয়ান্ডার এই পদক্ষেপকে “অসামঞ্জস্যপূর্ণ” এবং আলোচনার পরিবর্তে মতবিরোধের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কঙ্গো সরকার এই সংঘাতে অন্তত ৭,০০০ মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার এই ঘোষণার একদিন আগে, প্রেসিডেন্ট কাগামে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে চলমান সংঘাতের জন্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে সমর্থন যোগানোর অভিযোগ করেন। কঙ্গো এবং এম২৩ বিদ্রোহীরা মঙ্গলবার অ্যাঙ্গোলাতে (Angola) শান্তি আলোচনায় প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সংঘাত দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এই ঘটনার ফলে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আফ্রিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কঙ্গো, রুয়ান্ডা ও বেলজিয়ামের মধ্যেকার এই টানাপোড়েন বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা