ভোটের ময়দানে কিম মুন-সু! চমক না অপেক্ষায় দক্ষিণ কোরিয়া?

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে এখন আলোচনার ঝড়। দেশটির প্রধান রক্ষণশীল দল পিপল পাওয়ার পার্টি (PPP) আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তাদের প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন মন্ত্রী কিম মুন-সুকে বেছে নিয়েছে। জানা গেছে, আগামী ৩ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিম মুন-সু একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং সাবেক শ্রমমন্ত্রী ছিলেন। ৭৩ বছর বয়সী কিম গোয়াংগি প্রদেশের গোয়াংইয়াং শহরে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় সম্মেলনে ৫৬.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। মূলত, দেশটির প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসন করার পরেই এই নির্বাচনের ঘোষণা আসে।

দেশটির সাংবিধানিক আদালত এক রায়ে জানায়, ইউন সুক-ইওল অন্যায়ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছেন। এর ফলস্বরূপ, ইউনকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে হয় এবং দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়।

কিম একসময় শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কিন্তু পরে তিনি রক্ষণশীল শিবিরে যোগ দেন। তিনি ইউন সুক-ইওলের মন্ত্রিসভায় শ্রমমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, ২০০৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি গিউংগি প্রদেশের গভর্নর ছিলেন।

নির্বাচনে কিমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ং। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, লি প্রায় ৫০ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন। অন্যদিকে, কিমের সমর্থনের হার ১৩ শতাংশ।

তবে, এরই মধ্যে একটি আদালত রায়ে লি জায়ে-মিয়ংয়ের প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পূর্বে নির্বাচন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পেলেও, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল আদালতে পাঠিয়েছে।

কিম নির্বাচিত হলে ব্যবসা-বান্ধব নীতি গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার এবং ব্যবসা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করারও ঘোষণা দিয়েছেন। ছাত্রজীবনে শ্রমিক ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে তিনি কারাবন্দীও হয়েছিলেন।

তিনি তরুণ শ্রমিক ও সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তার জন্য নীতি আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি তার ভাষণে বলেন, “আমি কখনোই সমাজের দুর্বলতম মানুষকে ত্যাগ করিনি।”

এদিকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুও নাম লিখিয়েছেন। তিনি যদিও রক্ষণশীল দলের সদস্য নন, তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি এই দলের সঙ্গে জোট করে লিবেরালদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *