বন্যজীবন ক্যামেরাবন্দী করার আকর্ষণীয় জগৎ: আফ্রিকার সাফারি থেকে বাংলাদেশের প্রকৃতি পর্যন্ত
বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার শখ অনেকেরই। বাঘ, সিংহ কিংবা হরিণের ছবি তোলার সুযোগ পেলে যেন ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দী করতে ইচ্ছে করে।
বন্যজীবনকে ক্যামেরাবন্দী করা একদিকে যেমন আনন্দের, তেমনই এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কিছু বিশেষ কৌশল।
বিশেষ করে, যখন আফ্রিকার কোনো সাফারিতে বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার পরিকল্পনা করেন, তখন কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়।
আফ্রিকার জঙ্গলে ছবি তোলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন পেশাদার আলোকচিত্রী লরেন ব্রীডলাভ-এর অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার সময় সঠিক সরঞ্জাম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর মতে, দুটি ক্যামেরা বডি সাথে রাখা ভালো।
একটিতে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স (যেমন: ২৪-৭০ মিমি) ব্যবহার করা যেতে পারে, যা প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং দলবদ্ধ পশুর ছবি তোলার জন্য উপযোগী।
অন্য ক্যামেরায় একটি শক্তিশালী টেলিফটো লেন্স (যেমন: ২০০-৬০০ মিমি) ব্যবহার করা যেতে পারে, যা দূরের প্রাণীর ছবি স্পষ্টভাবে তুলতে সাহায্য করে।
এছাড়াও, পরিস্থিতি বুঝে ছবি তোলার জন্য একটি ৭0-২০০ মিমি লেন্স সাথে রাখা যেতে পারে।
বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার ক্ষেত্রে দ্রুত গতির শাটার স্পীড (সাধারণত ১/১০০০ বা তার বেশি) ব্যবহার করা জরুরি।
কারণ, বন্যপ্রাণী সব সময় স্থির থাকে না।
তাদের ছবি তোলার জন্য দ্রুত শাটার স্পীড ব্যবহার করলে ছবির মান ভালো থাকে।
ছবি তোলার সময় আইএসও (ISO) -এর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
খুব বেশি আইএসও ব্যবহার করলে ছবিতে নয়েজ আসতে পারে, তাই আইএসও ১৬০০-এর নিচে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ক্যামেরার লেন্স পরিষ্কার রাখার জন্য লেন্স ওয়াইপস, মাইক্রোফাইবার ক্লথ ও এয়ার ব্লোয়ার-এর মতো সরঞ্জাম সাথে রাখা দরকার।
লেন্সের সুরক্ষার জন্য ইউভি ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সাফারিতে ছবি তোলার সময় স্থিতিশীলতা বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এক্ষেত্রে, একটি বিন ব্যাগ-এর মতো সাপোর্ট ব্যবহার করা যেতে পারে, যা গাড়ির উপরে রেখে ছবি তোলার সময় ক্যামেরাকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
ছবি তোলার সময় মেমোরি কার্ডের স্থান দ্রুত ফুরিয়ে যেতে পারে।
তাই পর্যাপ্ত মেমোরি কার্ড সাথে রাখা উচিত।
পেশাদার আলোকচিত্রীরা তাঁদের মূল্যবান ক্যামেরা ও সরঞ্জামের সুরক্ষার জন্য বীমা করে থাকেন।
বাংলাদেশেও এখন বিভিন্ন বীমা কোম্পানি এই ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে।
আফ্রিকার সাফারিতে ছবি তোলার অভিজ্ঞতা অসাধারণ হতে পারে, তবে এর জন্য ভালো পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি প্রয়োজন।
এবার আসা যাক, বাংলাদেশের বন্যজীবন ও ছবি তোলার সুযোগের কথায়।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে।
সুন্দরবন, যেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার-এর দেখা পাওয়া যায়, অথবা পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফির দারুণ সুযোগ রয়েছে।
বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার ক্ষেত্রে ধৈর্য ও প্রকৃতির প্রতি সম্মান জানানো জরুরি।
বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার সময় তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোনো ব্যাঘাত ঘটানো উচিত নয়।
সুতরাং, যারা বন্যপ্রাণী ভালোবাসেন এবং ছবি তুলতে পছন্দ করেন, তাঁরা আফ্রিকার সাফারি বা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছবি তোলার পরিকল্পনা করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল + লেজার