আতঙ্ক! ব্যাকইয়ার্ড মুরগিতে সালমোনেলার থাবা, আক্রান্ত ৭!

শিরোনাম: যুক্তরাষ্ট্রের ঘটনায় গৃহপালিত পাখির মাধ্যমে সালমোনেলা সংক্রমণ, সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা।

বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে শহর ও গ্রামাঞ্চলে, বাড়ির উঠোনে হাঁস-মুরগি পালন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মানুষজন একদিকে যেমন নিজেদের খাদ্য চাহিদা মেটাচ্ছে, তেমনি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকেও ঝুঁকছে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক একটি ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, গৃহপালিত পাখির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে দেশটির ছয়টি রাজ্যে অন্তত সাতজন ব্যক্তির শরীরে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্ত রাজ্যগুলো হলো মিসৌরি, ফ্লোরিডা, ইলিনয়, সাউথ ডাকোটা, ইউটাহ এবং উইসকনসিন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আক্রান্তদের সবাই একই ধরনের সালমোনেলা স্ট্রেইনে (Salmonella strain) সংক্রমিত হয়েছিলেন, যা আগে হ্যাচারিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।

সালমোনেলা একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়া, যা প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের অসুস্থতার কারণ হয়। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ডিম, কাঁচা দুধ, তাজা শাকসবজি এবং গৃহপালিত পাখির মাধ্যমে ছড়ায়।

গত বছর, গৃহপালিত পাখির মাধ্যমে হওয়া একটি বড় ধরনের সংক্রমণে আটচল্লিশটি রাজ্যে ৪৭০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং একজনের মৃত্যু হয়েছিল।

চিকিৎসকদের মতে, সালমোনেলা সংক্রমণের প্রধান লক্ষণগুলো হলো জ্বর, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এবং বমি। এই সংক্রমণ সাধারণত কয়েক দিন স্থায়ী হয় এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়ে যায়।

তবে, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি, শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁস-মুরগি দেখতে সুস্থ ও পরিষ্কার মনে হলেও তাদের শরীরে সালমোনেলা থাকতে পারে। তাই, যারা বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন করেন, তাদের জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

  • মুরগি ও তাদের বাসস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
  • কাঁচা ডিম বা মাংস না খাওয়া উচিত।
  • মুরগির মাংস রান্নার সময় ভালোভাবে সেদ্ধ করতে হবে।
  • বাচ্চাদের হাঁস-মুরগির কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।

বাংলাদেশেও যেহেতু অনেকেই বাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন করেন, তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়ম মেনে চললে, আমরা গৃহপালিত পাখি পালনকে আরও নিরাপদ করতে পারি এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *