রূপচর্চার জগতে ব্যবহৃত কিছু উপাদানের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বিশেষ করে যারা নিয়মিতভাবে সেলুনে কাজ করেন, যেমন হেয়ার স্টাইলিস্ট, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি। চুলকে সোজা করতে বা কালার করতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যগুলোর মধ্যে ফর্মালডিহাইড, পিএফএএস (PFAS), ফিনাইলিনডায়ামিন এবং ফথ্যালেট-এর মতো উপাদান থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা নিয়মিতভাবে এইসব রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসেন, তাদের মধ্যে ক্যান্সার, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি তাদের শিশুদের জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণের ঝুঁকিও বাড়ে।
ওয়াশিংটনের একজন হেয়ার স্টাইলিস্ট মেরিদিত পেডাকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে সেলুনে কাজ করার কারণে মাল্টিপল কেমিক্যাল সেনসিটিভিটি (এমসিএস) নামক একটি জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমসিএস-এর কারণে সামান্য রাসায়নিকের সংস্পর্শেও তিনি তীব্র মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, স্মৃতি দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদে ভুগছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেলুন কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ অনেক সেলুন কর্মী স্বাধীনভাবে কাজ করেন এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে না। যদিও বিভিন্ন দেশে কর্মক্ষেত্রে রাসায়নিকের ব্যবহার সীমিত করার জন্য নিয়মকানুন রয়েছে, তবুও অনেক ক্ষেত্রে তা সঠিকভাবে মানা হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রসাধন সামগ্রীতে ব্যবহৃত ক্ষতিকর রাসায়নিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাদের আরও সময় লাগছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে যেখানে অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের পদক্ষেপের অভাব দেখা যায়।
এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে, উপাদানগুলোর সঠিক তালিকা এবং সেগুলোর ব্যবহারবিধি সম্পর্কে জানা জরুরি। যদিও অনেক সময় লেবেলে সব উপাদান উল্লেখ করা হয় না, অথবা এমন কিছু শব্দের ব্যবহার করা হয় যা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন।
বাংলাদেশেও সেলুন এবং রূপচর্চার চল বাড়ছে, তাই এই ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া এবং ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার সীমিত করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			