“দ্য সল্ট পাথ” – এক কঠিন পথ, ভালোবাসার আশ্রয়
জীবন কখনও কখনও আমাদের অপ্রত্যাশিত বাঁকে নিয়ে যায়। এমনই এক কঠিন বাস্তবতার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র “দ্য সল্ট পাথ”।
ব্রিটিশ লেখিকা রেইনর উইনের আত্মজীবনী অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমা দর্শকদের উপহার দেবে এক মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় দুই তারকা – জিলিয়ান অ্যান্ডারসন এবং জেসন আইজ্যাকস।
গল্পের শুরুটা বেশ করুণ। এক দম্পতির জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়।
হঠাৎ করেই তারা তাদের খামার হারান। এর মধ্যেই জানা যায়, স্বামীর (জেসন আইজ্যাকস) মস্তিষ্কে এক জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে।
জীবন যখন কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি, তখন তারা ঘুরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ধরে পায়ে হেঁটে পথচলার এক কঠিন যাত্রা শুরু করেন তারা।
পথটা সহজ ছিল না।
আর্থিক সংকট তাদের নিত্যসঙ্গী। সপ্তাহে মাত্র ৪০ পাউন্ড (প্রায় ৫,৪০০ বাংলাদেশী টাকা)* – এই সামান্য কিছু অর্থ সম্বল করে তাদের দিন কাটাতে হতো।
থাকার জায়গা ছিল না, রাতে তাঁবুতে আশ্রয় নিতে হতো। কিন্তু ভালোবাসার শক্ত বাঁধন তাদের এক সুতোয় গেঁথে রেখেছিল।
একে অপরের প্রতি গভীর বিশ্বাস আর ভালোবাসাই ছিল তাদের প্রধান শক্তি।
পথ চলতে গিয়ে তারা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন, যা তাদের মানসিক শান্তির খোরাক জুগিয়েছে।
অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সামান্য সহানুভূতি তাদের পথচলার সাহস জুগিয়েছে।
কোনো পাবের বারটেন্ডার যখন তাদের বিনামূল্যে গরম জল দিয়ে চা বানানোর ব্যবস্থা করতেন, তখন যেন তারা নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা খুঁজে পেতেন।
অভিনয়ের কথা বলতে গেলে, জিলিয়ান অ্যান্ডারসন এবং জেসন আইজ্যাকস দুজনেই অনবদ্য।
তারা রেইনর এবং মথের চরিত্রে এতটাই মিশে গেছেন যে, তাদের কষ্ট-যন্ত্রণা পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
পরিচালক মারিয়ান এলিয়ট-এর মুন্সিয়ানা দর্শকদের মুগ্ধ করবে।
এই সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথমবার পা রেখেছেন এবং তার পরিচালনার মুন্সিয়ানা দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে।
“দ্য সল্ট পাথ” শুধু একটি সিনেমার নাম নয়, এটি এক কঠিন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
প্রতিকূলতাকে জয় করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প এটি।
ভালোবাসার গভীরতা আর মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছাশক্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই সিনেমা।
যারা ভালোবাসেন জীবনকে, যারা ভালোবাসেন মানুষের পাশে থাকতে, তাদের জন্য এই সিনেমা অবশ্যই দেখা উচিত।
*বি.দ্র.: এই মূল্যের (৪০ পাউন্ড) বিনিময় হার সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
তথ্যসূত্র: The Guardian