স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে প্রস্তুত স্যামসাং, অ্যাপেলের সাথে টেক্কা দেওয়ার প্রস্তুতি।
স্বাস্থ্যখাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, এবং এই পরিবর্তনের সাথে তাল মেলাতে প্রস্তুত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। বয়স্ক মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়ে, তারা তাদের নতুন স্মার্টওয়াচ সংস্করণে যুক্ত করতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক সব স্বাস্থ্য বিষয়ক ফিচার।
মূলত, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চাইছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৫ সাল নাগাদ স্বাস্থ্যখাতে খরচ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই কারণে, ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব বাড়ছে, এবং স্যামসাং এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছে।
কোম্পানির ডিজিটাল স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান, হন পাকের মতে, বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী রোগের প্রবণতা বাড়ছে।
তাই, স্বাস্থ্যসেবা এখন বাড়ির কাছাকাছি নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, যেখানে স্যামসাং-এর উপস্থিতি এরই মধ্যে বিদ্যমান।
বাজার গবেষণা সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী, স্মার্টফোন বাজারে স্যামসাং শীর্ষস্থানে থাকলেও, স্মার্টওয়াচ বাজারে তারা এখনো অ্যাপেলের থেকে পিছিয়ে।
তবে, স্যামসাং মনে করে, তারা স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে ব্যবহারকারীদের মন জয় করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, নতুন স্মার্টওয়াচে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidant – অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট) গ্রহণের পরিমাণ পরিমাপ করার সুবিধা যোগ করা হচ্ছে।
এই ফিচারটি ত্বকের ওপর এলইডি আলো ফেলে বিটা ক্যারোটিনের (Beta Carotene – বিটা ক্যারোটিন) মাত্রা নির্ধারণ করতে পারবে। বিটা ক্যারোটিন হলো গাজর, মিষ্টি আলু এবং পালং শাকের মতো খাবারে পাওয়া যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
শুধু তাই নয়, ঘুমের সময়সূচী তৈরি এবং দৌড়বিদদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম তৈরি করার মতো সুবিধাও এই সংস্করণে যোগ করা হচ্ছে। অ্যাপেলও সম্প্রতি তাদের স্মার্টওয়াচে এই ধরনের কোচিং ফিচার যুক্ত করেছে।
স্যামসাং-এর পরিকল্পনা শুধু স্মার্টওয়াচের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তারা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence – এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন স্মার্ট চশমা তৈরি করার কথা ভাবছে, যা খাবারের প্লেট বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারীর খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে।
খাবারের অ্যালার্জেন (allergen – অ্যালার্জেন) আছে কিনা, কিংবা তারা দ্রুত খাচ্ছে কিনা, সেই বিষয়েও ধারণা দিতে পারবে এই চশমা।
তবে, স্যামসাং স্মার্টওয়াচের একটি সীমাবদ্ধতা হলো, এটি বর্তমানে শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড (Android) অপারেটিং সিস্টেমের সাথে কাজ করে।
অ্যাপেলের (Apple) ব্যবহারকারীদের জন্য এটি উপযুক্ত নয়। যদিও, ভবিষ্যতে অ্যাপেলের সাথে কাজ করার সম্ভাবনা এখনো খোলা রেখেছে স্যামসাং।
বর্তমানে বাংলাদেশে স্মার্টওয়াচের বাজার বাড়ছে, এবং মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে। স্যামসাং-এর নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক ফিচারগুলো যদি ব্যবহারকারীদের জন্য সহজলভ্য এবং কার্যকরী হয়, তবে এটি স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ এবং সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে, স্যামসাং স্মার্টওয়াচ ব্যবহারকারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারবে বলে আশা করা যায়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন