স্পেনের সান সেবাস্তিয়ানে ২০৩০ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের বিরোধিতা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শহরটির বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা এবং কয়েকটি সংগঠন ফিফার কাছে একটি চিঠি লিখেছে, যেখানে তারা এই শহরকে বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে তালিকাভুক্ত না করার আবেদন জানিয়েছেন।
তাদের মূল উদ্বেগের বিষয় হলো, বিশ্বকাপ আয়োজনের ফলে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা মনে করেন, বিশ্বকাপ আয়োজন শহরের জীবনযাত্রার মান আরও কমিয়ে দেবে। এর ফলে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, যা শহরের সংস্কৃতি এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করবে।
তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সান সেবাস্তিয়ানে পর্যটকদের সংখ্যা ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলস্বরূপ, স্থানীয় বাসিন্দারা শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, জনসাধারণের স্থানগুলো বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং পর্যটন শিল্পের চাহিদা মেটাতে অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
ঐতিহ্যপূর্ণ পিন্ডো বার (pintxo bars) এবং মিচেলিন-তারকা রেস্তোরাঁর জন্য সুপরিচিত সান সেবাস্তিয়ানে পর্যটকদের এই ক্রমবর্ধমান চাপ সেখানকার সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার ওপর ‘ভয়াবহ’ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংস্কৃতিকে বিপণনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অক্টোবরের শেষের দিকে, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। স্পেনে পর্যটনের ব্যাপক বিস্তারের কারণে গত বছরও এমন প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের মেগা ইভেন্ট (Mega event) কিছু বিশেষ সুবিধাভোগীর জন্য লাভজনক হতে পারে, তবে এর ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে।
বাসস্থান সংকট আরও বাড়বে, পর্যটন বাড়বে এবং শহরের স্থানগুলোর বাণিজ্যিকীকরণ ঘটবে। এছাড়া, টেকসই পরিবহন অবকাঠামো তৈরি এবং নিরাপত্তার নামে এমন সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে যা দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করবে।
তবে, এই আবেদনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন সান সেবাস্তিয়ানের মেয়র। তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে শহরটির দীর্ঘদিনের সুনাম রয়েছে এবং এই নিয়ে বাসিন্দাদের গর্বিত হওয়া উচিত।
মেয়রের মতে, বিশ্বকাপ আয়োজন শহরের আন্তর্জাতিক পরিচিতি আরও বাড়াবে। ফিফার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান