সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রীড়া, শরীরচর্চা ও পুষ্টি বিষয়ক পরিষদে নিজের নাম দেখে বেশ অবাক হয়েছিলেন ফিলাডেলফিয়া ঈগলসের তারকা ফুটবলার স্যাকোন বার্কলি।
কয়েক মাস আগে এই পরিষদে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, এমনটাই জানিয়েছেন বার্কলি।
বার্কলি জানান, তিনি এই পরিষদের কার্যক্রম সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত নন।
খেলা ও পরিবারের বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে তার পক্ষে এই পরিষদে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলেই তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, “কয়েক মাস আগে আমার দলের কাছে এই পরিষদ বিষয়ক প্রস্তাব এসেছিল।
আমি বিষয়টি নিয়ে খুব একটা ওয়াকিবহাল নই।
আমার মনে হয়, আমি এখন খুবই ব্যস্ত থাকব।
তাই পরিবার ও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, এই প্রস্তাব গ্রহণ করা ঠিক হবে না।
তাই যখন শুনলাম আমার নাম এই পরিষদের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তখন একটু অবাক হয়েছি।
আমি মনে করি এটা নিশ্চয়ই ভালো কিছু, তাই আমি কৃতজ্ঞ।
তবে আমার নাম আসায় খানিকটা বিস্মিত হয়েছি।”
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে এই পরিষদের পুনর্গঠন করেন এবং বেশ কয়েকজন শীর্ষ ক্রীড়াবিদের নাম ঘোষণা করেন।
তাদের মধ্যে বার্কলি অন্যতম।
বার্কলি এবং ট্রাম্পের মধ্যে ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
ঈগলসের সুপার বোল জয়ের পর দলটির হোয়াইট হাউস সফরের আগের দিন বার্কলিকে ট্রাম্পের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায়।
বিমানবন্দরের সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বার্কলিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “লোকটা খুব ভালো।”
এরপর তিনি যোগ করেন, “আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতায় নামতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পরে তা করিনি।”
পরে দু’জনে ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এও একসঙ্গে সফর করেন।
গত এপ্রিল মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বার্কলি এবং ট্রাম্প নিউ জার্সির বেডমিনিস্টারে অবস্থিত ‘ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাব’-এ একসঙ্গে গলফ খেলছেন।
তাদের টেবিলে ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ লেখা টুপিও দেখা যায়।
ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করা এবং গলফ খেলার সিদ্ধান্তের জন্য সমালোচনার শিকার হওয়ার পর বার্কলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর জবাব দেন।
তিনি লেখেন, “আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গলফ খেলেছি এবং হোয়াইট হাউসে গিয়েছি, এতে কিছু লোক বেশ upset হয়েছে।
সম্ভবত আমি এই পদের প্রতি সম্মান দেখাই, যা বোঝা কঠিন কিছু নয়।
আমি কিছুদিন আগেও ওবামার সঙ্গে গলফ খেলেছি… এবং ট্রাম্পের সঙ্গেও খেলাটা শেষ করার অপেক্ষায় আছি!
এবার তোমরা রাজনীতি নিয়ে আমার পেছনে লেগে থেকো না, ভালো থেকো।”
হোয়াইট হাউস কর্তৃক এই পরিষদে নিযুক্ত অন্যান্য ক্রীড়াবিদদের মধ্যে রয়েছেন গলফার ব্রাইসন ডিচাম্বো, যিনি পরিষদের চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন; এনএইচএল কমিশনার গ্যারি বেটম্যান, সান ফ্রান্সিসকো ফোরটি নাইনার্সের রক্ষণভাগের তারকা নিক বোসা; কানসাস সিটি চিফসের কিকার হ্যারিসন বাটকার; এবং টেক্সাস টেক-এর ‘নেইম, ইমেজ অ্যান্ড লাইকনেস’ (NIL) বিষয়ক প্রধান এবং কলেজের খেলাধুলায় ট্রাম্পের নীতির গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর কোডি ক্যাম্পবেল।
এই তালিকায় আরও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন এনএফএল কমিশনার রজার গুডেল; হকি কিংবদন্তি ওয়েন গ্রেটজকি; গলফার নেলি কোর্ডা; ডব্লিউডব্লিউই নির্বাহী এবং পেশাদার কুস্তিগীর পল “ট্রিপল এইচ” লেভেস্ক; গলফ কিংবদন্তি জ্যাক নিকলাস এবং গ্যারি প্লেয়ার; হল অফ ফেমের পিচার মারিয়ানো রিভেরা; অবসরপ্রাপ্ত কোয়ার্টারব্যাক এবং বর্তমানে সিবিএস এনএফএল-এর ধারাভাষ্যকার টনি রোমো; গলফার আনিকা সোরেনস্ট্যাম; মায়ামি ডলফিনসের কোয়ার্টারব্যাক টুয়া টাগোভাইলোয়া; সাবেক নিউ ইয়র্ক জায়ান্টসের তারকা লরেন্স টেইলর; এবং ফ্লোরিডা প্যান্থার্সের খেলোয়াড় ম্যাথিউ টাকাক।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্রীড়া বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট আয়োজনে ট্রাম্পের আগ্রহ রয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ২০২৫ সালের রাইডার কাপ, ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০২৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক।
এছাড়াও, ট্রাম্প ক্রীড়া বিষয়ক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়েও কাজ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন ১৯৬৬ সালে ‘প্রেসিডেন্টশিয়াল ফিটনেস টেস্ট’ চালু করেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই পরীক্ষা পুনরায় চালুর ঘোষণা দেন।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের শারীরিক শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি ‘প্রেসিডেন্টশিয়াল ফিটনেস অ্যাওয়ার্ড’ প্রদানেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন