অভিনেত্রী সারা রু: হলিউড থেকে দূরে, নতুন রূপে!

অভিনেত্রী সারা রুয়ের জীবন: হলিউড থেকে কেপ কোডের শান্ত জীবন এবং নতুন দিগন্তের সূচনা

হলিউডের ঝলমলে দুনিয়া থেকে দূরে, যুক্তরাষ্ট্রের কেপ কোডের শান্ত পরিবেশে এখন দিন কাটছে অভিনেত্রী সারা রুয়ের। এক সময়ের জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘পপুলার’-এর এই অভিনেত্রী অভিনয় জীবন থেকে যেন কিছুটা অবসর নিয়েছেন।

তবে এই অবসর সময়ে তিনি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন অন্য এক কাজে— নিজের বাড়ির সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনে।

সারা রুয়ের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল খুব অল্প বয়সে। মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি অভিনয় জগতে পা রাখেন। ‘পপুলার’ ছাড়াও তিনি ‘দ্য বিগ ব্যাং থিওরি’র মতো জনপ্রিয় সিরিজে অভিনয় করেছেন।

কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি এবং ২০২৩ সালের মার্কিন লেখক ধর্মঘটের কারণে তাঁর জীবনে আসে পরিবর্তন। সিনেমার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি এবং তাঁর পরিবার লস অ্যাঞ্জেলেস ছেড়ে কেপ কোডে বসবাস শুরু করেন।

কেপ কোডে আসার আগে রুয়ের পরিবার এই জায়গাটিকে গ্রীষ্মের অবকাশ কাটানোর জন্য একটি বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু পরিস্থিতি তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনে।

রুয়ে বলেন, “ব্যবসাটা যখন সত্যিই বদলাতে শুরু করলো, সবকিছু ভার্চুয়ালি হতে থাকল, তখন আমরা ভাবলাম, ‘কিছুদিনের জন্য এখানে থাকা যাক’। আর সেখান থেকেই সবকিছু শুরু।”

কেপ কোডে তাঁর মেয়েরা এখন এক ব্লক দূরে বাস স্টপে যায়, যা লস অ্যাঞ্জেলেসের যানজটের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই পরিবর্তন তাঁকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।

রুয়ে জানান, “আমি কাজ করতে ভালোবাসি। অভিনয় করতে ভালো লাগে। অনেক দিন ধরে মনে হতো, কাজই আমাকে খুশি করে।

কিন্তু যখন সেই সুযোগটা থাকল না, তখন নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করলাম, আর কী আমাকে খুশি করতে পারে?”

নিজের বাড়ির সংস্কার করতে গিয়ে রুয়ে নতুন এক আনন্দ খুঁজে পান। তিনি বলেন, “নিজেই যখন ঘর সাজানোর কাজ শুরু করলাম, তখন ভালো লাগা কাজ করত।

কারো ওপর নির্ভর করতে হতো না, এটিও ছিল অন্যরকম।”

এই কাজে তিনি ইউটিউব থেকে বিভিন্ন কৌশল শিখেছেন। লাইট ফিটিংস বদলানো থেকে শুরু করে দেয়াল সাজানো—সবকিছুই তিনি নিজে করেছেন। এমনকি তাঁর প্রতিবেশী, যিনি পেশায় একজন দমকলকর্মী এবং যিনি নিজের বাড়ি তৈরি করেছেন, তাঁর কাছ থেকেও অনেক সাহায্য পেয়েছেন রুয়ে।

সারা রুয়ের মতে, এই ধরনের কাজ করার কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তিনি বলেন, “সাধারণত, এই জিনিসগুলো একত্র করে স্ক্রু লাগালে কাজ হয়ে যায়।

অর্ধেক সময় কাজ হয়, আর বাকি অর্ধেক সময়ে মনে হয়, আবার শুরু করতে হবে।”

বাস্তবিক অর্থে, এই ধরনের কাজ রুয়ের সৃজনশীলতার একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে। সম্প্রতি তিনি তাঁর লন্ড্রি রুম সংস্কার করেছেন।

তিনি জানান, শুরুতে অন্যদের কাজ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাতে সুবিধা হয়নি। তাই নিজেই কাজটি করার সিদ্ধান্ত নেন।

নতুন মেঝে তৈরি, দেয়াল সাজানো থেকে শুরু করে সিলিং লাগানো—সবকিছুই তিনি করেছেন।

অবশ্য, এখনো কিছু কাজ তিনি নিজে করেননি। যেমন, বিদ্যুতের কাজ এবং পাইপ বসানোর মতো বিষয়গুলো তাঁর কাছে ভীতিকর।

রুয়ে বলেন, “যে জিনিসগুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি ভয় দেখায়, সেগুলোই আমাদের করা উচিত, কারণ তা না করলে আমরা উন্নতি করতে পারি না।”

সারা রুয়ের দুটি মেয়ে রয়েছে। তাঁদের মা হিসেবে তিনি সবসময় চান, তাঁর মেয়েরা যেন দেখে যে তিনি কোনো কাজ শুরু করলে তা শেষ করেন।

অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও, তিনি এখনো চান ভালো কোনো কাজ পেলে আবার অভিনয়ে ফিরতে।

বর্তমানে তিনি কেপ কোডে শান্ত জীবন উপভোগ করছেন। একইসঙ্গে লস অ্যাঞ্জেলেসে তাঁর একটি বাড়িও আছে, যেখানে তিনি প্রয়োজন অনুযায়ী যান।

সারা রুয়ের মতে, অভিনয় তাঁর প্রথম প্রেম, আর এই মুহূর্তে তিনি পরিবার এবং নতুন এই ‘ডু ইট ইয়োরসেলফ’ (DIY) জগতে সময় কাটাতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।

ভবিষ্যতে তিনি গ্যারেজ সংস্কার এবং রান্নাঘরের মতো বড় প্রকল্প হাতে নিতে চান।

তথ্যসূত্র: পিপল ম্যাগাজিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *