সৌদি: তেল সাম্রাজ্যের পর এবার এআই-এর বিশাল বাজি!

সৌদি আরব বিশ্বজুড়ে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজারে নিজেদের প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে বিশাল বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। দেশটির ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে চাইছে তারা।

এই লক্ষ্যে দেশটির সার্বভৌম সম্পদ তহবিল প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।

সৌদি আরবের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য ‘হিউমেইন’ নামে একটি স্থানীয় কোম্পানি তৈরি করা হয়েছে। কোম্পানিটি ডেটা সেন্টার, ক্লাউড পরিষেবা, বৃহৎ ভাষা মডেল (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) এবং বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছে।

হিউমেইনের লক্ষ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এআই বাজারে পরিণত হওয়া। কোম্পানিটি ২০৩৪ সাল নাগাদ সারাদেশে প্রায় ৬ গিগাওয়াট ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চায়।

হিউমেইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক আমিন সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, “সৌদি আরবের বিশাল ও সুলভ মূল্যের জ্বালানি সরবরাহ করার ক্ষমতা রয়েছে, যা ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।”

এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে, হিউমেইন ব্ল্যাকস্টোনের সঙ্গে ডেটা সেন্টার নির্মাণের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছে। এছাড়াও, ‘হিউমেইন ওয়ান’ নামে একটি এআই-চালিত অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা চিহ্নের পরিবর্তে কথা বলে বা টাইপ করে কম্পিউটারকে কাজ করতে বলতে পারবে।

বর্তমানে হিউমেইন তাদের অভ্যন্তরীণ কাজে যেমন— মানবসম্পদ, অর্থ, আইন, পরিচালনা এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগগুলোতে এই এআই সিস্টেম ব্যবহার করছে। তারেক আমিন জানিয়েছেন, বর্তমানে তাদের পে-রোল বিভাগে একজন কর্মী কাজ করেন, বাকি সব কাজ এআই এজেন্টরা করে থাকে।

সৌদি আরবের এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিবেশী সংযুক্ত আরব আমিরাতও (ইউএই) এআই খাতে বিশাল বিনিয়োগ করছে। তারাও ‘জি৪২’ নামে একটি এআই কোম্পানি তৈরি করেছে এবং ‘স্টারগেট ইউএই’ নামে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের একটি ডেটা সেন্টার প্রকল্প তৈরি করতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি আরবের এই বিশাল বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাত এবং কর্মীবাহিনীর জন্য সৌদি আরবের এআই-এর উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কারণ, এতে সহযোগিতা ও বিনিময় এর সম্ভাবনা বাড়ছে।

বর্তমানে, বাংলাদেশেও সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। তাই, সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য এআই খাতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *