স্কারলেট জোহানসন ও জেমস ফ্রাঙ্কো: কেন তাদের কুইয়ার চরিত্রে অভিনয় নিয়ে এত আলোচনা?

হলিউডে ‘ক্যুইয়ার’ চরিত্রে অভিনয়: বিতর্ক, বাস্তবতা ও ভিন্নতার গুরুত্ব।

হলিউডে (Hollywood) সিনেমায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় নিয়ে প্রায়ই আলোচনা-সমালোচনা হয়। সম্প্রতি, সমকামিতা বা কুইয়ার (Queer) চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি হলো, এই ধরনের চরিত্রে ‘সোজা’ বা ‘গে’ নন এমন অভিনেতাদের অভিনয় করা উচিত কিনা। এই বিষয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা জাস্টিন কেলির (Justin Kelly) একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পাওয়া গেছে।

কেলির মতে, বিখ্যাত অভিনেতারা যখন কুইয়ার চরিত্রে অভিনয় করেন, তখন তা কুইয়ার গল্পগুলোকে বৃহত্তর দর্শকের কাছে পৌঁছে দেয় এবং সিনেমার অর্থায়নে সাহায্য করে।

উদাহরণস্বরূপ, স্কারলেট জোহানসন (Scarlett Johansson) যখন রুপ অ্যান্ড ট্যাগ (Rub & Tug) সিনেমায় একজন রূপান্তরকামী পুরুষের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলেন, তখন বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। যদিও পরে তিনি এই সিনেমা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।

কেলির মতে, এমনটা হওয়া উচিত নয়। কারণ, এর ফলে কুইয়ার বিষয়ক ভালো গল্পগুলো তৈরি হওয়ার সুযোগ কমে যায়।

কেলির মতে, এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার কারণে অভিনেতাদের ‘কুইয়ারবেইটিং’-এর (Queerbaiting)-এর মতো অভিযোগ শুনতে হয়।

কুইয়ারবেইটিং হলো, কোনো অভিনেতা বা শিল্পী, যিনি আসলে কুইয়ার নন, কিন্তু দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য কুইয়ারদের মতো আচরণ করেন। কেলির মতে, এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

তিনি মনে করেন, সমাজের মূল স্রোতে কুইয়ারদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের (Kristen Stewart) কাজের প্রশংসা করেছেন কেলি।

ক্রিস্টেন ‘জে টি লেরয়’ (JT LeRoy) সিনেমায় একজন কুইয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কেলি জানান, ক্রিস্টেন এই চরিত্রের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন।

কাহিনীর সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করার কারণেই তিনি কাজটি করতে রাজি হয়েছিলেন।

এই বিতর্কের কারণ হলো, সিনেমায় কুইয়ার চরিত্রগুলো কতটুকু সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।

অনেক সময় দেখা যায়, এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতারা নিজেরা কুইয়ার না হওয়ায় চরিত্রটিকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেন না।

এর ফলে, কুইয়ার সম্প্রদায়ের মানুষেরা হতাশ হন।

তবে, কেলির মতো অনেকের মতে, বিখ্যাত অভিনেতাদের এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করাটা জরুরি।

এর মাধ্যমে কুইয়ার গল্পগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়।

সিনেমায় ভিন্নতা আনা এবং সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে এই ধরনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমান সময়ে, সিনেমায় বিভিন্ন ধরনের মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার প্রবণতা বাড়ছে।

নির্মাতারা এখন চেষ্টা করছেন, সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের কথা সিনেমায় তুলে ধরতে।

এই প্রেক্ষাপটে, কুইয়ার চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকবে, তবে এর মাধ্যমে সিনেমার জগতে আরও বেশি ভিন্নতা আসবে, এমনটাই প্রত্যাশা করা যায়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *