মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ডেমোক্রেট দলের নেতা চাক শ্যুমারের বিরুদ্ধে দলের মধ্যেই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। রিপাবলিকানদের আনা একটি অর্থ বিলকে সমর্থন করার কারণে এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।
এই বিলটি পাশ হওয়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাজকর্ম সচল থাকবে, কিন্তু ডেমোক্রেটদের অনেকে মনে করছেন, এর মাধ্যমে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এজেন্ডাকে কার্যত সমর্থন করা হয়েছে।
রবিবার এক সাক্ষাৎকারে শ্যুমার তাঁর এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেন। তিনি জানান, সরকারের অচলাবস্থা এড়াতে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
শ্যুমারের মতে, বিলটি খারাপ হলেও, সরকার বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিলটি পাশ না হলে ধনকুবের এলন মাস্ক ও তাঁর ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিতেন, যা খুবই ক্ষতিকর হতো।
শ্যুমারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ডেমোক্রেট দলের অনেক সদস্য। তাঁদের অভিযোগ, শ্যুমার ট্রাম্পের এজেন্ডার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
মেরিল্যান্ডের কংগ্রেসম্যান গ্লেন আইভি প্রকাশ্যে শ্যুমারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, শ্যুমারের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনকে তিনি সম্মান করেন, তবে এখন সিনেটের নতুন নেতা নির্বাচন করা উচিত।
নিউইয়র্কের কংগ্রেসম্যান অ্যালেক্সান্ড্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজও শ্যুমারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে একে ‘আপোস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, ডেমোক্রেট দলের সদস্যরা ট্রাম্পের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলোতেও অনেক ঝুঁকি নিয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে শ্যুমারের এই ধরনের সিদ্ধান্ত হতাশাজনক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শ্যুমারের এই সিদ্ধান্ত ডেমোক্রেট দলের মধ্যে বিভেদ আরও বাড়াতে পারে। কারণ, আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দলটিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও দলের মধ্যে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। তবে শ্যুমার জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না।
তাঁর মতে, ডেমোক্রেট দল ট্রাম্পের নীতিমালার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে। দলের লক্ষ্য হলো, ট্রাম্পকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘ক্ষমতাহীন’ প্রমাণ করা, তাঁর খারাপ নীতিগুলো সামনে এনে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান