প্লুটোনিয়াম: সংগ্রহ করতে গিয়ে জেলে যেতে পারেন ‘বিজ্ঞান পাগল’!

অস্ট্রেলিয়ার একজন ‘বিজ্ঞান-অনুরাগী’ পারমাণবিক উপাদান প্লুটোনিয়াম আমদানি করার দায়ে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন। সিডনির বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সী ইমানুয়েল লিডেন নামের ওই ব্যক্তি পর্যায় সারণীর (periodic table) সমস্ত উপাদান সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে অনলাইনে এই তেজস্ক্রিয় পদার্থটির অর্ডার দিয়েছিলেন।

২০২৩ সালের আগস্ট মাসে লিডেনের সিডনির বাড়িতে প্লুটোনিয়াম আসার পরে অস্ট্রেলিয়ান সীমান্ত বাহিনী (Australian Border Force – ABF), দমকল কর্মী, পুলিশ এবং প্যারামেডিকসহ জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাদের সেখানে যেতে হয়েছিল। পারমাণবিক অস্ত্রের মতো কোনো ধ্বংসাত্মক কিছু তৈরির উদ্দেশ্যে তিনি যে এই কাজ করেননি, বরং এটি ছিল তার একটি “সরল-স্বভাবের” কাজ, এমনটাই বলছেন তার আইনজীবী।

আদালতে লিডেনের আইনজীবী জন সাটন জানান, তার মক্কেল একজন “নিষ্পাপ সংগ্রাহক”, যিনি বিজ্ঞান ভালোবাসেন। তিনি আরও বলেন, “এই জিনিসগুলো আমদানি করার পেছনে তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। নিছক সরলতা থেকেই তিনি এমনটা করেছেন।” স্ট্যাম্প, ব্যাংকনোট ও কয়েন সংগ্রহেরও তার শখ ছিল।

তবে সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, লিডেনকে নিছক সংগ্রাহক হিসেবে দেখাটা ভুল হবে। তাদের মতে, অবৈধ উপাদানের প্রতি আগ্রহ তৈরি করে এমন সংগ্রাহকরা এক ধরনের বাজার তৈরি করে, যা হয়তো অন্যথায় থাকত না। জন সাটন আরও অভিযোগ করেন, সীমান্ত কর্মকর্তারা কিছু উপাদান জব্দ করার পর তা আবার লিডেনের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে “দ্বৈত আচরণ” করেছেন।

আদালতে শুনানিতে জানা যায়, লিডেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে এই উপাদানগুলো অর্ডার করেছিলেন, যা তার বাবা-মায়ের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। আইনজীবী সাটন এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ঘটনাটি ছিল অনেকটা সার্কাসের মতো।” তিনি আরও বলেন, “তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ যা জানত, তাতে প্রতিক্রিয়ার মাত্রা ছিল অনেক বেশি।”

আগে লিডেন একজন ট্রেনি ট্রেন ড্রাইভার ছিলেন। কিন্তু এই ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার পরে তিনি তার চাকরি হারান। বর্তমানে তিনি একটি ফাস্ট-ফুড রেস্টুরেন্টে বার্গার বানানোর কাজ করেন।

১১ই এপ্রিল আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *