আলোড়ন সৃষ্টিকারী আবিষ্কার! বিজ্ঞানীরা দেখলেন ‘নতুন রং’, যা মানুষের কল্পনার বাইরে!

শিরোনাম: বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁরা এমন একটি রং আবিষ্কার করেছেন যা আগে কেউ দেখেনি।

দৃষ্টির জগৎ সবসময়ই আমাদের কৌতূহল জাগায়। মানুষ হিসেবে আমরা নানা রঙের সঙ্গে পরিচিত, যা আমাদের চারপাশের জগৎকে আরও সুন্দর করে তোলে।

কিন্তু সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী এমন একটি রং আবিষ্কারের দাবি করেছেন, যা আগে কেউ দেখেনি। তাঁদের মতে, এই নতুন রঙের নাম ‘ওলো’।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে-র বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায় চোখের রেটিনার কিছু কোষকে বিশেষ উপায়ে উদ্দীপ্ত করে এই নতুন রং তৈরি করেছেন।

তাঁরা চোখের মধ্যে লেজার রশ্মি প্রবেশ করিয়ে, রেটিনার ‘এম’ কোষগুলোকে (আলোর মাঝারি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের প্রতি সংবেদনশীল কোষ) সক্রিয় করেন।

সাধারণত, প্রাকৃতিক আলোতে এই কোষগুলোকে আলাদাভাবে উদ্দীপ্ত করা সম্ভব হয় না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁরা এমন একটি রং তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যা মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টিসীমার বাইরে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘ওলো’ রং দেখতে অনেকটা নীল-সবুজ এর মতো, তবে এর গভীরতা এবং উজ্জ্বলতা স্বাভাবিক রঙের চেয়ে অনেক বেশি।

এই রং সম্পর্কে ধারণা দিতে, বিজ্ঞানীরা একটি ফিরোজা রঙের বর্গক্ষেত্রের ছবি প্রকাশ করেছেন। যদিও তাঁদের মতে, এই ছবি ‘ওলো’-র আসল রূপ ফুটিয়ে তুলতে পারে না।

কারণ, এই রং শুধু লেজারের মাধ্যমে রেটিনার কোষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেই দেখা সম্ভব।

গবেষণা দলের প্রধান, রেন এনগ-এর মতে, “আমরা শুরু থেকেই ধারণা করেছিলাম যে, এটি একটি নতুন ধরনের রঙের অনুভূতি তৈরি করবে। কিন্তু মস্তিষ্কের উপর এর প্রভাব কেমন হবে, তা আগে থেকে বোঝা কঠিন ছিল।

বাস্তবে, এটি ছিল একেবারে অবিশ্বাস্য, অত্যন্ত উজ্জ্বল একটি রং।”

তবে, এই আবিষ্কার নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। লন্ডনের সিটি সেন্ট জর্জ’স ইউনিভার্সিটির একজন দৃষ্টি বিজ্ঞানী, জন বারবার এই দাবিকে বিতর্কিত বলেছেন।

তাঁর মতে, “এটি কোনো নতুন রং নয়, বরং আরও উজ্জ্বল সবুজ রং, যা শুধুমাত্র স্বাভাবিক ‘লাল-সবুজ’ বর্ণানুভূতির অধিকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ‘এম’ কোষ থেকে আসা সংকেতের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে।”

তাঁর মতে, এই গবেষণার গুরুত্ব সীমিত।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, তাঁদের এই আবিষ্কার দৃষ্টি-সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ, যেমন—বর্ণান্ধতা বা রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা (retinitis pigmentosa)-এর চিকিৎসার জন্য নতুন পথ খুলে দিতে পারে।

সেইসঙ্গে, মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা লাভের সুযোগ তৈরি হবে।

তাহলে কি খুব শীঘ্রই আমরা স্মার্টফোন বা টিভিতে ‘ওলো’ দেখতে পাব?

রেন এনগ-এর মতে, এখনই তেমন সম্ভাবনা নেই। কারণ, এটি একটি মৌলিক বিজ্ঞান গবেষণা এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) প্রযুক্তির থেকেও অনেক দূরের বিষয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *