মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা আসন্ন? এই প্রশ্নটি এখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে যখন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যেই এ নিয়ে ভিন্নমত দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং এই মন্দা আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি, বরং অর্থনীতির “পরিবর্তনকালীন সময়” এর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এরপর থেকেই, তাঁর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন। মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লটনিক, এনবিসি’র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “আমি কখনোই মন্দার উপর বাজি ধরব না। কোনো সুযোগ নেই।”
অন্যদিকে, একই অনুষ্ঠানে, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট অবশ্য নিশ্চিত করে বলতে পারেননি যে মন্দা আসবে না। তিনি বলেছেন, “আমি কোনো কিছুরই নিশ্চয়তা দিতে পারি না।” বেসেন্টের এই মন্তব্যের সঙ্গে তাঁর আগের বক্তব্যের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
সিএনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ‘ডি-টক্স পিরিয়ড’-এর কথা বলেছিলেন। যদিও পরে তিনি বুঝিয়েছেন যে এর অর্থ এই নয় যে মন্দা আসবে। তিনি আরও যোগ করেন, “বিষয়টি নির্ভর করবে কত দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তার ওপর। আমাদের লক্ষ্য হল একটি মসৃণ পরিবর্তন নিশ্চিত করা।”
মার্কিন অর্থনীতির এই দোলাচল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। দেশটির সম্ভাব্য মন্দা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নানাভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণও হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উচিত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া।
বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির সময়ে, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে, বিভিন্ন বিকল্প বাজার অনুসন্ধান করা এবং রপ্তানি বহুমুখী করা জরুরি। একইসঙ্গে, রেমিটেন্সের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
তবে, এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সবকিছুই নির্ভর করছে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তনের ওপর। তথ্য সূত্র: সিএনএন