খেলাধুলার জগতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কলেজ পর্যায়ের বাস্কেটবল এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এক সময় আমেরিকান ফুটবল বা গ্রিড আয়রণের জন্য পরিচিত সাউথইস্টার্ন কনফারেন্স (SEC) এখন বাস্কেটবলেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন (NCAA) টুর্নামেন্টে এসইসি-র ১৪টি দল খেলার সুযোগ পায়, যা একটি রেকর্ড। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাদের সুপরিকল্পিত কিছু পদক্ষেপ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কলেজ পর্যায়ের খেলাধুলা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি বিষয়। এই খেলাগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়ায় এবং প্রচুর অর্থ নিয়ে আসে।
এসইসি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে। তারা বাস্কেটবল প্রোগ্রামগুলোতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।
নতুন খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে, খেলোয়াড়দের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, খেলোয়াড়দের ভালো মানের ডরমিটরি এবং অনুশীলনের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা তৈরি করা হয়েছে।
শুধু অবকাঠামো নয়, এসইসি-র দলগুলো ভালো মানের কোচ নিয়োগ করেছে। এই ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ এবং সফল কোচদের বেছে নেওয়া হয়েছে, যারা হয় অন্য শক্তিশালী কনফারেন্স থেকে এসেছেন, না হয় মাঝারি মানের দলগুলোকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন।
এর ফলস্বরূপ, টেনেসির রিক বার্নস, মিসৌরির ডেনিস গেটস, ফ্লোরিডার টড গোল্ডেন, এবং আলাবামার ন্যাট ওটসের মতো কোচের অধীনে দলগুলো ভালো ফল করেছে।
খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও এসইসি-র দলগুলো বেশ সচেতন ছিল। তারা খেলোয়াড়দের ট্রান্সফার এবং নতুন খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিয়েছে।
অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ানো হয়েছে, আবার প্রতিভাবান তরুণ খেলোয়াড়দেরও সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, অবার্নের জনি ব্রুম, ফ্লোরিডার ওয়াল্টার ক্লেটন জুনিয়র এবং আলাবামার মার্ক সিয়ার্সের মতো খেলোয়াড়রা অন্য জায়গা থেকে এসে এসইসি-র দলগুলোকে শক্তিশালী করেছে।
বর্তমান সময়ে, খেলোয়াড়দের ‘নেইম, ইমেজ, এবং লাইকনেস’ (NIL) থেকে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এসইসি-র দলগুলো তাদের সেরা খেলোয়াড়দের ধরে রাখার জন্য এবং নতুন খেলোয়াড় আকৃষ্ট করার জন্য এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারাও এই কাজে সহায়তা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ব্যবসায়ী মার্ক এইচ. কার্টার বিশ্ববিদ্যালয়টিকে NIL-এর জন্য ১.৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন।
এসইসি-র এই সাফল্যের পেছনে প্রধান কারণগুলো হলো: বাস্কেটবল প্রোগ্রামে অর্থ বিনিয়োগ, ভালো মানের কোচ নিয়োগ এবং খেলোয়াড়দের আকৃষ্ট করতে পারা।
এই কৌশলগুলো অনুসরণ করে এসইসি কলেজ বাস্কেটবলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকলে, ভবিষ্যতে এই কনফারেন্স আরও অনেক রেকর্ড গড়বে বলে আশা করা যায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।