মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল সিনেটে আটকে গেল।
ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের আপত্তির কারণে এই বিলটি পাশ করানো সম্ভব হয়নি। মূলত, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত কিছু কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগের কারণেই ডেমোক্র্যাটরা এই বিলের বিরোধিতা করেন।
বিলটি ‘জিনিয়াস অ্যাক্ট’ নামে পরিচিত, যা মূলত ‘স্টেবলকয়েন’ নামক ডিজিটাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
স্টেবলকয়েন হলো এমন এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি যা কোনো নির্দিষ্ট সম্পদের (যেমন মার্কিন ডলার) সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই বিলটি সিনেটে উভয় দলের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা হিসেবে দেখা হলেও, শেষ পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটদের আপত্তির কারণে তা ভেস্তে যায়।
ভোটাভুটিতে বিলটি পাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ৬০টি ভোটের সমর্থন পাওয়া যায়নি। ৪৯-৪৮ ভোটে বিলটি আটকে যায়।
রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল এবং জশ হাওলি ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বিলের বিপক্ষে ভোট দেন।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই বিলের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এই বিলটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুর্নীতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে এবং এতে ভোক্তাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই।
ওয়ারেন আরও বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তবে এই বিলটি সে জন্য উপযুক্ত নয়।
বিলে অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং, বিদেশি ইস্যুকারী এবং জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে আরও সুস্পষ্ট বিধান যুক্ত করার দাবি জানিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটরা।
তাদের মতে, এই বিষয়গুলো নিশ্চিত না করে বিলটি পাস করা হলে তা দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
এদিকে, কিছু ডেমোক্র্যাট সিনেটর ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের বিরোধিতা করে একটি নতুন বিল উত্থাপনের প্রস্তাব করেন।
‘এন্ড ক্রিপ্টো কারাপশন অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে তারা প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস সদস্য এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি সমর্থন বা ইস্যু করা থেকে বিরত রাখতে চেয়েছিলেন।
মার্কিন সিনেটে উভয় দলের সমর্থন আদায় করে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি নিয়ন্ত্রক বিল সাধারণত সহজে পাশ হয় না।
তবে, এই বিলটি সিনেটের ব্যাংকিং কমিটি থেকে ১৮-৬ ভোটে অনুমোদন লাভ করে।
এই বিলের বিরোধিতাকারীরা মনে করেন, ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তাদের মতে, কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে যে তা নির্ভরযোগ্য এবং দেশের জন্য নিরাপদ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি এর প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনা করি, তাহলে দেখা যায়, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আমাদের দেশেও আগ্রহ বাড়ছে।
তাই, ডিজিটাল মুদ্রা এবং এর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তা আমাদের নীতিনির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে ভোক্তাদের সুরক্ষা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য একটি উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরি করা অপরিহার্য।
তথ্য সূত্র: সিএনএন