খাবার স্ট্যাম্প: ট্রাম্পের বিলে অভিভাবকদের জন্য কী পরিবর্তন?

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনতে সিনেটের প্রস্তাব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (Food Stamps) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সম্প্রতি, সিনেট কৃষি কমিটি খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির কিছু শর্তাবলীতে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে। এই পরিবর্তনের ফলে কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলি মূলত ‘সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম’ (SNAP) এর কর্মসংস্থান বিষয়ক শর্তাবলীর সঙ্গে সম্পর্কিত। বর্তমানে, এই প্রোগ্রামের অধীনে সুবিধা পেতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।

সিনেটের প্রস্তাব অনুযায়ী, ১০ বছর বা তার বেশি বয়সী সন্তানের অভিভাবকেরা খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য কাজ করতে বাধ্য হবেন। অন্যদিকে, প্রতিনিধি পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বিলে এই বয়সসীমা ৭ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

বর্তমানে, শিশুদের অভিভাবকেরা এই বাধ্যবাধকতার আওতামুক্ত। প্রস্তাবে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সিনেট কমিটি প্রবীণ নাগরিক, গৃহহীন ব্যক্তি এবং আশ্রয়হীন তরুণদের জন্য কিছু ছাড়ের প্রস্তাব বাতিল করেছে। তবে, এই পরিবর্তনগুলো এখনো চূড়ান্ত নয় এবং আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো, সুবিধাভোগীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর হতে সহায়তা করা। সিনেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর মাধ্যমে করদাতাদের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

তবে, অনেকেই মনে করছেন, এই পরিবর্তনের ফলে খাদ্য সহায়তার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন অনেকে। বিশেষ করে, যারা কাজ করেন, কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে সহায়তা পান না, অথবা স্বাস্থ্যগত কারণে কাজ করতে পারেন না, তাদের জন্য এই পরিবর্তন সমস্যা তৈরি করবে।

খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির ব্যয়ভার বহন করা নিয়েও নতুন প্রস্তাব এসেছে। সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ উভয়ই রাজ্যগুলোকে এই কর্মসূচির ব্যয়ের অংশীদার করার কথা বলেছে।

তবে, সিনেট এক্ষেত্রে রাজ্যের জন্য কম অংশীদারিত্বের প্রস্তাব করেছে। সিনেটের প্রস্তাব অনুযায়ী, যে রাজ্যগুলোতে ত্রুটির পরিমাণ ৬ শতাংশের কম, তাদের কোনো অর্থ দিতে হবে না।

অন্যদিকে, ত্রুটির পরিমাণ ১০ শতাংশ বা তার বেশি হলে রাজ্যগুলোকে ব্যয়ের ১৫ শতাংশ বহন করতে হবে। প্রতিনিধি পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী, সব রাজ্যকে কমপক্ষে ৫ শতাংশ এবং ত্রুটির পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি হলে ২৫ শতাংশ ব্যয় বহন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যগুলোকে এই ধরনের আর্থিক বোঝা চাপানো হলে তা কর্মসূচির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এর ফলে অনেক রাজ্য হয়তো সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে তাদের নিয়মকানুন পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে অথবা প্রোগ্রাম থেকে বেরিয়ে আসবে।

এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে অনেক পরিবার। আন্তর্জাতিক সংবাদ সূত্রে জানা যায়, এই পরিবর্তনের ফলে খাদ্য সহায়তার সুবিধাভোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে।

খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির ওপর এই পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে এবং বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ নিতে আরও সময় লাগবে। তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *