যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ হতে যাচ্ছে। এই বিলটি ‘স্টেবলকয়েন’ নামক এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আনা হয়েছে। সিনেটে ভোটাভুটিতে ৬৬-৩২ ভোটে বিলটি পাসের পক্ষে রায় আসে। ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরা প্রথমে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নিয়ে উদ্বেগের কারণে বিলটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
**স্টেবলকয়েন কী এবং কেন এর নিয়ন্ত্রণ জরুরি?**
আসলে, স্টেবলকয়েন হলো এমন এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি, যা একটি নির্দিষ্ট সম্পদের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই ক্ষেত্রে, এটি মার্কিন ডলারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অর্থাৎ, ১টি স্টেবলকয়েনের মূল্য ১ মার্কিন ডলারের সমান। এই ধরনের মুদ্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এর নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
এই বিলটির মূল উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং একইসঙ্গে এই খাতে নতুন উদ্ভাবনগুলিকে উৎসাহিত করা। বিলটির সমর্থকরা মনে করেন, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির উন্নতি হবে এবং বিশ্ব বাজারে মার্কিন ডলারের আধিপত্য বজায় থাকবে।
সিনেটর কার্স্টেন গিলিব্র্যান্ডের মতে, “এই বিলটি ভোক্তাদের সুরক্ষা দেবে এবং একই সঙ্গে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে।
বিগত কয়েক মাস ধরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই বিল নিয়ে আলোচনা চলছিল। যদিও উভয় দলই এই ধরনের নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে, তবে কিছু ডেমোক্র্যাট সদস্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক কিছু ডিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, এই বিলটি ট্রাম্পের সুবিধা করতে পারে।
সিনেটর মার্ক ওয়ার্নারের মতে, “এই বিলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, তবে ট্রাম্প পরিবারের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের বিষয়ে আমাদের কিছু উদ্বেগ রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এই খাতে উদ্ভাবন যেন নিরাপদ, স্বচ্ছ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও জাতীয় স্বার্থের অনুকূলে হয়।
অন্যদিকে, ডেমোক্রেট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই বিলের দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, “একটি শক্তিশালী স্টেবলকয়েন বিল নিঃসন্দেহে ভালো, কিন্তু এই দুর্বল বিল কোনো বিলের চেয়েও খারাপ।
তাঁর আশঙ্কা, এই বিলটি ভোক্তাদের ক্ষতি করতে পারে এবং দুর্নীতির কারণ হতে পারে।
এই বিলটি এখন আইনে পরিণত হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। এই আইনটি কার্যকর হলে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে, যেখানে ডিজিটাল মুদ্রার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা চলছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন