আলোচনা: ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটদের বিদ্রোহ!

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে (Senate) সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

বুধবার সিনেটে কানাডা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

ডেমোক্রেট সিনেটর টিম কেইন (Tim Kaine) এই প্রস্তাবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তিনি জানান, কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন নিয়ে এই প্রস্তাব পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, ট্রাম্প এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছেন এবং রিপাবলিকান সিনেটরদের এর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

রিপাবলিকান সিনেটর র‍্যান্ড পল (Rand Paul) এই প্রস্তাবের সহ-পৃষ্ঠপোষক।

এছাড়া, আরও কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটর এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ তারা মনে করেন শুল্ক তাদের এলাকার মানুষের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।

এই বিষয়ে সিনেটে ভোটাভুটির ফল সীমিত হবে, কারণ প্রতিনিধি পরিষদে (House of Representatives) এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।

প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা ইতোমধ্যেই একটি প্রস্তাব এনেছেন, যেখানে চলতি বছর কানাডা, মেক্সিকো বা চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করে কোনো আইন প্রণয়ন করা যাবে না।

সিনেটর কেইন জানিয়েছেন, তিনি মঙ্গলবার রাতে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেলের (Mitch McConnell) সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং ম্যাককনেল এই প্রস্তাবকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কেইন আরও জানান, তিনি অন্তত চারজন রিপাবলিকান সিনেটরের শক্ত সমর্থন আশা করছেন, যা প্রস্তাবটি পাসের জন্য যথেষ্ট হবে।

এছাড়া আরও কয়েকজন রিপাবলিকান বিষয়টি বিবেচনা করছেন, তবে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশালে’ (Truth Social) একটি পোস্টে রিপাবলিকানদের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বিশেষ করে চারজন রিপাবলিকান সিনেটর—র‍্যান্ড পল, মিচ ম্যাককনেল, লিসা মুরকোওস্কি (Lisa Murkowski) এবং সুজান কলিন্সকে (Susan Collins) উল্লেখ করে বলেন, তাদের উচিত রিপাবলিকান আদর্শের প্রতি সমর্থন জানানো।

সিনেটর মুরকোওস্কি জানিয়েছেন, তিনি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন।

অন্যদিকে, সিনেটর কলিন্স বলেছেন, তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রস্তাবটি ভালোভাবে পর্যালোচনা করতে চান।

বুধবার সিনেট ফ্লোরে দেওয়া ভাষণে কলিন্স কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ মেইন অঙ্গরাজ্যের (Maine) অনেক পরিবার এবং স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে।”

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় ‘মুক্তি দিবস’ পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পারেন, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তি নতুন করে সাজানোর কথা ভাবছেন।

শুল্ক সংক্রান্ত বিস্তারিত এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে জানা গেছে, ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ, কাঠ, তামা, ওষুধ এবং মাইক্রোচিপের মতো পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন।

সিনেটর কেইন বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, এর ফলে কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বিশেষ করে হুইস্কি শিল্পের ক্ষতির কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত, মিচ ম্যাককনেলও একই কথা শুনছেন।”

যদিও বুধবার ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কী ঘোষণা করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে কেইন মনে করেন, এর কারণে তার প্রস্তাবের ভোট গণনায় কোনো প্রভাব পড়বে না।

তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প আমাকেও আক্রমণ করেছেন।

এতে আমার কোনো প্রভাব পড়েনি।

যাদের আক্রমণ করা হয়েছে, তাদেরও কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।”

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *