ট্রাম্প বিরোধী আগুনে ওসোফের বাজিমাত: কঠিন লড়াইয়ে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ!

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট সিনেটর জোন ওসোফের (Jon Ossoff) নির্বাচনী কৌশল নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে (Georgia) জয়লাভের জন্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (Donald Trump) সরাসরি আক্রমণের পথে হাঁটছেন তিনি।

সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ওসোফ মনে করেন ট্রাম্পের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ভোটারদের মধ্যে তার প্রতি অসন্তোষ বাড়ছে।

ওসোফের এই কৌশল এমন এক সময়ে এসেছে যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা কিছুটা নিম্নমুখী। সাধারণত, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যের প্রার্থীরা নির্বাচনের আগে মধ্যপন্থী অবস্থান নেন এবং অন্য দলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মিলে কাজ করার বার্তা দেন, যাতে ভোটারদের সমর্থন পাওয়া যায়।

কিন্তু ওসোফ সম্ভবত ভিন্ন পথে হাঁটছেন। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের ক্ষমতা বিস্তারের চেষ্টা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের প্রতি আক্রমণ এবং কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বল করার পরিকল্পনা অনেক ভোটারের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তার এই পদক্ষেপ আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

ওসোফ মনে করেন, ট্রাম্পের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক ভোটার তার থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্পকে ‘গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি সরকারের ব্যয় বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে হওয়া অচলাবস্থা (government shutdown) নিয়েও কথা বলেন। এছাড়া, ইয়েমেনে (Yemen) হাউছি বিদ্রোহীদের (Houthis) উপর হামলার সময় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

ওসোফ এই কর্মকর্তাদের কঠোর সমালোচনা করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পেতে ডেমোক্র্যাটদের জন্য আগামী নির্বাচন বেশ কঠিন হতে পারে। বর্তমানে সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে (৫৩-৪৭)।

ইতিমধ্যে তিনজন ডেমোক্র্যাট সিনেটর তাদের পদ থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে দলটির জন্য নতুন আসন তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

জর্জিয়া রাজ্যে রিপাবলিকানদের শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে এবং এখানে ওসোফের বিরুদ্ধে লড়তে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রিপাবলিকান দল ইতিমধ্যে ওসোফের বিরুদ্ধে প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা অভিবাসন ইস্যুতে (immigration) ওসোফের নীতির সমালোচনা করছে।

উল্লেখ্য, ওসোফ সম্প্রতি একটি বিতর্কিত বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, যেখানে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের (undocumented migrants) আটক রাখার কথা বলা হয়েছে। যদিও তিনি মনে করেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল ‘অনেক দেরিতে নেওয়া পদক্ষেপ’, তবুও ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে ‘কঠোর’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্পসহ (Brian Kemp) আরও কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা ওসোফের আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য আলোচনা করছেন। এই বিষয়ে ওসোফ বলেন, কে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হবে, তা নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না।

তবে তিনি নির্বাচনে যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। রিপাবলিকান দলের কংগ্রেসম্যান বাডি কার্টারও (Buddy Carter) এই আসনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

জোন ওসোফ মনে করেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াটা এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, ট্রাম্পের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তিনি গণতন্ত্রকে ভয় ও ভীতি দিয়ে কলুষিত করার চেষ্টা করছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *