সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিক-এর বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে হাজার হাজার মানুষ। সরকার বিরোধী এই বিক্ষোভের মূল কারণ হলো, দেশটির একটি রেল স্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনা।
বিক্ষোভকারীরা ভুসিক-এর পদত্যাগ এবং আটককৃতদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ভুসিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
রবিবার এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ভুসিক এই বিক্ষোভকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং এর পেছনে পশ্চিমা বিশ্বের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, তার সরকারকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে, তিনি তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করেননি।
ভুসিক আরও বলেন, দেশের পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ এবং বিক্ষোভকারীরা যদি তাদের কার্যক্রম বন্ধ না করে, তবে ‘কয়েক দিনের মধ্যে’ কারও মৃত্যু হতে পারে। তিনি দ্রুতই এর মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।
যদিও তিনি জরুরি অবস্থা জারির সম্ভাবনা নাকচ করেছেন।
গত কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। শনিবার রাতে পশ্চিমা সার্বিয়ার একটি শহরে ভুসিকের ক্ষমতাসীন দলের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
রাজধানী বেলগ্রেড এবং নোভিসাড শহরেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় গত নয় মাসের বেশি সময় আগে, যখন একটি রেল স্টেশনের ছাদ ধসে পড়ে। এই ঘটনায় অনেকে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন।
তাদের মতে, অবকাঠামো খাতে দুর্বল সংস্কার কাজের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সার্বিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভের চেষ্টা করছে, তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভুসিক রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
রবিবার তিনি তার সরকারের প্রতি রাশিয়ার সমর্থনকে স্বাগত জানান।
এ পরিস্থিতিতে, সার্বিয়ার জনগণের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে যেমন প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতা ধরে রাখতে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনই বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন।
সার্বিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন