মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে আসন্ন ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নির্বাচন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই নির্বাচনে বর্তমান সিনেটর, ৮০ বছর বয়সী এড মার্কেয়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামছেন ৪৬ বছর বয়সী কংগ্রেসম্যান সেথ মউলটন।
মউলটনের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন নেতৃত্বের বয়স এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
মউলটন তাঁর প্রচারণার শুরুতে বর্তমান ডেমোক্রেট নেতাদের, বিশেষ করে মার্কেয়কে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোকাবিলায় দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ডেমোক্রেটরা পুরনো কৌশল আঁকড়ে ধরেছেন এবং ট্রাম্পের ‘ক্ষতিকর ও বর্ণবাদী’ এজেন্ডা রুখতে যথেষ্ট চেষ্টা করেননি।
মউলটনের মতে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, মার্কেয়ের মতো প্রবীণ নেতাদের পক্ষে বর্তমান সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
মার্কিন রাজনীতিতে প্রাইমারি নির্বাচন হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মনোনীত প্রার্থী বাছাই করে। এই নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী সাধারণত মূল নির্বাচনে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ম্যাসাচুসেটসের এই নির্বাচনে মউলটনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখানে ডেমোক্রেটদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। অতীতেও, সিনেটর মার্কেয় বেশ কয়েকবার এই আসনে জয়লাভ করেছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জো কেনেডি তৃতীয়কে পরাজিত করে আলোচনায় এসেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের ফল শুধু ম্যাসাচুসেটসের জন্য নয়, বরং পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃশ্যপটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, এই নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বের বয়স এবং নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিতর্ক আরও জোরালো হবে।
মউলটনের এই চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে যখন তিনি নেতৃত্বের পরিবর্তনের কথা বলছেন, তখন তা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
মউলটন তাঁর বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন, যা তাঁর মেরিন কোরের (Marine Corps) দিনগুলির একটি ঘটনা। তিনি বলেন, যুদ্ধের শেষে তিনি এক সহযোদ্ধাকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান।
তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি যদি একটু আগে পৌঁছতে পারতেন, তাহলে হয়তো সেই সৈনিককে একা মরতে হতো না। এই ঘটনার মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি এখনই মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান এবং দলের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে চান।
এই নির্বাচনের ফলাফল কি হবে, তা এখনো বলা কঠিন। তবে এটা নিশ্চিত যে, সেথ মউলটনের এই চ্যালেঞ্জ মার্কিন রাজনীতিতে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, ভোটাররা পরিবর্তনের এই আহ্বানে কীভাবে সাড়া দেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন