**শাবুজির সাফল্যের গল্প: নাইজেরিয়া থেকে আমেরিকার সঙ্গীত জগতে**
সঙ্গীতশিল্পী শাবুজির উত্থান যেন রূপকথার মতো। নাইজেরীয় বংশোদ্ভূত এই শিল্পী, যিনি একাধারে সঙ্গীত প্রযোজক এবং গীতিকার, তাঁর ব্যতিক্রমী গান “এ বার সং (টিপসি)” দিয়ে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছেন।
গানটি শুধু জনপ্রিয়তাই পায়নি, একইসঙ্গে তৈরি করেছে রেকর্ড। বিলবোর্ড হট ১০০-এ দীর্ঘদিন ধরে এক নম্বর অবস্থানে ছিল এই গানটি, যা কোনো একক শিল্পীর জন্য একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
শাবুজির আসল নাম হলো কলিন্স ওবিন্না চিবিউজে। আমেরিকার ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি ছোট শহরে তাঁর বেড়ে ওঠা।
তাঁর বাবার ছিল আমেরিকান সংস্কৃতি এবং পশ্চিমা সঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগ। বাবার মুখে কেনি রজার্স ও ডলি পার্টনের গান শুনেই সঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন শাবুজি।
বাবার কঠোর পরিশ্রম ও আত্মনির্ভরশীলতার গল্প তাঁকে সবসময় অনুপ্রাণিত করত। বাবার কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে শাবুজি বলেন, “বাবা সবসময় বলতেন, নিজের জীবনকে সফল করতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
শাবুজির গানের জগতে প্রবেশটা সহজ ছিল না। শুরুতে তিনি নিজের সৃজনশীলতাকে একটি দিশা দিতে পারছিলেন না।
শুরুতে হিপ-হপ ঘরানার গান করলেও, তিনি সবসময় চেয়েছেন সঙ্গীতের ভিন্ন ধারা নিয়ে কাজ করতে। তাঁর এই ভিন্ন ধরনের সঙ্গীতচর্চা তাঁকে এনে দিয়েছে সাফল্য।
সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারার মিশেলে তৈরি তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘হোয়্যার আই’ভ বিন, ইজন্ট হোয়্যার আই’ম গোইং’ শ্রোতাদের মন জয় করেছে। এই অ্যালবামটি তাঁর সঙ্গীত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
“এ বার সং (টিপসি)” গানটি তৈরির অভিজ্ঞতা নিয়ে শাবুজি বলেন, “কখনও কখনও সহজ-সরলভাবে কাজ করাই সেরা উপায়। আমি সবসময় সবকিছু নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করতাম, কিন্তু আমার ম্যানেজার আমাকে বুঝিয়েছিলেন, সবসময় সবকিছু এত জটিল করার প্রয়োজন নেই। স্টুডিওতে মজা করতে করতেই গানটি তৈরি হয়ে যায়।”
এই গানটি তাঁকে এনে দিয়েছে ২০২৩ সালের গ্রামি অ্যাওয়ার্ডের পাঁচটি মনোনয়ন। শুধু তাই নয়, তিনি মেট গালা-র মতো অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন এবং জনপ্রিয় শিল্পী বেয়ন্সের সঙ্গেও কাজ করেছেন।
শাবুজির সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর কঠোর পরিশ্রম এবং সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা। ভবিষ্যতে তিনি আরও নতুন কিছু করতে চান।
তাঁর পরিকল্পনা আছে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলার এবং ফ্যাশন জগতে কাজ করার। বর্তমানে তিনি তাঁর প্রথম কনসার্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শাবুজির এই সাফল্যের গল্প তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠোর অধ্যবসায় ও নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে যে কোনো কিছুই জয় করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: পিপল