শেইন ও তেমুর দামে বড় ধাক্কা: ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তে মাথায় হাত!

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তনের ফলে চীন থেকে আসা পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে, অনলাইন ফ্যাশন প্ল্যাটফর্ম Shein (শেইন) এবং Temu (টেমু)-এর মতো জনপ্রিয় সাইটগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা সাধারণত কম দামে পণ্য বিক্রি করে থাকে।

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের কারণে এই পরিবর্তন আসছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ‘ডি মিনিমিস’ ছাড় বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ছোট আকারের পণ্য শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিত। এই নিয়মের অধীনে, চীন থেকে আসা প্রায় সকল পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে চীন সহ বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক দিতে হবে। আগে এই ছাড়ের কারণে ছোট আকারের প্যাকেজগুলো, যেগুলোর মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলারের নিচে ছিল, সেগুলো শুল্ক ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারতো।

এই সিদ্ধান্তের ফলে শেইন এবং তেমুর মতো কোম্পানিগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠানো কঠিন হয়ে পড়বে। তারা এখন হয়তো পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে, যা সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

উদাহরণস্বরূপ, ভিয়েতনাম থেকে আসা পণ্যের ওপর প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে, গ্রাহকদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) প্রতিদিন প্রায় ৪০ লক্ষ ডি মিনিমিস শুল্কমুক্ত পণ্য পরীক্ষা করে। গবেষণা বলছে, এর একটি বড় অংশ আসে চীন ও হংকং থেকে।

গত অর্থবছরে, প্রায় ১৩৬ কোটি প্যাকেজ ডি মিনিমিস ছাড়ের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে।

আগামী ২৯শে আগস্ট থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর, আন্তর্জাতিকভাবে পাঠানো পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো হবে। শুল্কের পরিমাণ নির্ভর করবে পণ্যের উৎপত্তিস্থল বা দেশটির শুল্ক হারের ওপর।

উদাহরণস্বরূপ, যে দেশের শুল্ক হার ১৬ শতাংশের কম, তাদের পণ্যের জন্য প্রতি আইটেমের শুল্ক ৮০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যারা ১৬ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়ে, তাদের জন্য এই হার হতে পারে ১৬০ ডলার, এবং যাদের শুল্ক হার ২৫ শতাংশের বেশি, তাদের জন্য তা হতে পারে ২০০ ডলার।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিবর্তনের ফলে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, ডি মিনিমিস প্যাকেজগুলোর প্রায় ৪৮ শতাংশ আসে দরিদ্র অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে, যেখানে ধনী এলাকাগুলোতে এই হার মাত্র ২২ শতাংশ।

আগে, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের জন্য ডি মিনিমিস ছাড় বাতিল করে, কিন্তু পরে সেইসব পণ্যের শুল্ক ১২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫৪ শতাংশ করে। বর্তমানে এই ধরনের পণ্যের জন্য একটি ১০০ ডলারের ফ্লাট ফি-এরও ব্যবস্থা রয়েছে।

বর্তমানে, অ্যামাজনসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোও এই পরিবর্তনের শিকার হবে। অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সবসময় সবচেয়ে কম দামে পণ্য সরবরাহ করার চেষ্টা করে এবং অন্যান্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে প্রস্তুত।

এই পরিবর্তনের ফলে, ভোক্তাদের কেনাকাটার ধরনেও পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ, শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়লে, মানুষ হয়তো কম কিনবে অথবা অন্য কোনো বিকল্প খুঁজবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *