অপহরণ: মিথ্যা সাজানো শেররি পাপিনির, আসল ঘটনা ফাঁস!

শিরোনাম: অপহরণের নাটক: মিথ্যা বলার দায়ে অভিযুক্ত মার্কিন নারীর নতুন অভিযোগ।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা শেররি পাপিনি নামের এক নারীর অপহরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি দুই হিস্পানিক নারীর দ্বারা অপহৃত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায়, পুরোটাই ছিল সাজানো।

এবার, সেই ঘটনার প্রায় সাত বছর পর, তিনি তার প্রাক্তন প্রেমিক জেমস রেইসের বিরুদ্ধে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর। ক্যালিফোর্নিয়ার রেড্ডিং শহরে মর্নিং জগিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হন পাপিনি। তার স্বামী এবং প্রতিবেশীরা তাকে খুঁজতে ব্যাপক তল্লাশি চালান। এমনকি, তার পরিবারের জন্য সাহায্য চেয়ে একটি গোফান্ডমি (GoFundMe) অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছিল, যেখানে প্রায় ৪৯,০০০ ডলার জমা হয়।

২২ দিন পর, পাপিনি রেডডিং থেকে প্রায় ১৫০ মাইল দূরে, একটি মহাসড়কের পাশে ফিরে আসেন। তার শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন, পোড়া ক্ষত, এবং চুলও কাটা ছিল। কোমরে বাঁধা ছিল শিকল, হাতে ছিল ক্ল্যাম্প।

শুরুর দিকে, তদন্তকারীদের কাছে পাপিনি দাবি করেছিলেন, দুই মুখোশধারী হিস্পানিক নারী তাকে অপহরণ করে নির্যাতন করেছে। কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন, পুরো ঘটনা সাজানো ছিল।

তিনি আসলে রেইসের সঙ্গে কোস্টা মেসা শহরে ছিলেন। মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে পাপিনিকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং মুক্তি পাওয়ার পর ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৩ লক্ষ ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি, ‘শেররি পাপিনি: কট ইন দ্য লাই’ (Sherri Papini: Caught in the Lie) শিরোনামের একটি তথ্যচিত্রে পাপিনি দাবি করেছেন, তিনি আসলে রেইসের সঙ্গে সম্পর্কের কথা গোপন করতে চেয়েছিলেন। কারণ, তার স্বামী জানতে পারলে হয়তো তাকে ত্যাগ করতেন।

তাই, তিনি অপহরণের গল্প তৈরি করেন। তার অভিযোগ, রেইসই তাকে অপহরণ করে একটি নির্জন স্থানে বন্দী করে রেখেছিলেন এবং সেখানে তিনি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।

তবে, পাপিনির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেমস রেইস। তিনি বলেছেন, পাপিনি তার স্বামীকে ফাঁকি দিতে চেয়েছিলেন এবং অপহরণের পুরো পরিকল্পনা তিনিই করেছিলেন। এমনকি, শরীরে আঘাতের চিহ্নগুলোও নাকি পাপিনির নিজের তৈরি।

ঘটনার সময় পরা পাপিনির পোশাক থেকে পাওয়া ডিএনএ-র সঙ্গে রেইসের ডিএনএ মিলে যাওয়ার পর, তিনি পুলিশের কাছে এ কথা জানান। পরে, তিনি একটি পলিগ্রাফ পরীক্ষাতেও (polygraph test) উত্তীর্ণ হন, যেখানে তিনি অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

পাপিনির এই নতুন অভিযোগ আবারও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একদিকে যেমন, তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইছেন, তেমনই এই ঘটনার সত্যতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এই মামলার চূড়ান্ত পরিণতি কী হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্র: পিপল (People)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *