গার্বেজ ব্যান্ডের শিল্পী শার্লি ম্যানসন: সঙ্গীত, স্বাস্থ্য এবং প্রতিকূলতাকে জয় করা
শার্লি ম্যানসন, যিনি গার্বেজ ব্যান্ডের প্রধান শিল্পী, তাঁর কণ্ঠের মাধ্যমে নব্বইয়ের দশকে সঙ্গীত জগতে ঝড় তুলেছিলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর সঙ্গীত জীবন, শারীরিক অসুস্থতা এবং নারী হিসেবে সঙ্গীত জগতে টিকে থাকার সংগ্রামের কথা বলেছেন।
নতুন অ্যালবাম ‘লেট অল দ্যাট উই ইমাজিন বি দ্য লাইট’ (Let All That We Imagine Be the Light) নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি তিনি জীবনের নানা অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেছেন।
শার্লি ম্যানসন স্কটল্যান্ডে জন্ম গ্রহণ করলেও বর্তমানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তাঁর মতে, খ্যাতি বা প্রশংসা সব সময় আনন্দের হয় না।
তিনি তাঁর নতুন অ্যালবামের একটি গান ‘চাইনিজ ফায়ার হর্স’-এর (Chinese Fire Horse) কথা উল্লেখ করেন, যেখানে জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
২০১৬ সালে এক কনসার্টের সময় মঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে ম্যানসনের একটি গুরুতর আঘাত লাগে। এই আঘাতের কারণে তাঁর হিপ প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে, যা তাঁর শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছিল।
তিনি জানান, অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠাটা কঠিন ছিল, তবে তিনি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এই সময়ে ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা দূর থেকে গানের আইডিয়া পাঠাতেন, যা দিয়ে নতুন অ্যালবাম তৈরি করা হয়।
শার্লি ম্যানসন তাঁর ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে বলেন, তাঁদের মধ্যে গভীর বোঝাপড়া রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কঠিন সময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়াই।”
নব্বইয়ের দশকে গার্বেজ ব্যান্ড ‘স্টুপিড গার্ল’ (Stupid Girl) এবং ‘অনলি হ্যাপি হুইন ইট রেইনস’ (Only Happy When It Rains)-এর মতো জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছিলো।
ম্যানসন জানান, সেই সময়ে তিনি কীভাবে সঙ্গীতের জগতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি তখন খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতাম। একদিন একটি ফোন আসে, যেখানে আমাকে আমেরিকার একজন বিখ্যাত সঙ্গীত প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর পরেই আমি নতুন একটি ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম।”
গার্বেজ ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবামটি বিশ্বজুড়ে দারুণ সাফল্য অর্জন করে, যা তাঁদের খ্যাতি আরও বাড়িয়ে দেয়।
ম্যানসন সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেই সময়ে নারী শিল্পীদের প্রতি মিডিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি অনেক কঠিন ছিল। তিনি জানান, “আমি তখন তরুণ ছিলাম, তাই অনেক কিছুই সেভাবে খেয়াল করিনি।
কিন্তু ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারলাম, আমাকে নিয়ে অনেক খারাপ কথা লেখা হয়েছে, যা আমাকে কষ্ট দিয়েছে।”
শার্লি ম্যানসন তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি জানান, তিনি বিষণ্ণতায় ভুগেছেন, তবে তিনি মানসিক দিক থেকে শক্ত ছিলেন।
তিনি মনে করেন, পৃথিবীতে ভালো থাকতে হলে মাঝে মাঝে খারাপ অনুভব করাটা স্বাভাবিক।
সঙ্গীত জগতে নারীদের সংগ্রাম নিয়ে ম্যানসন বলেন, “নব্বইয়ের দশকে নারীরা যখন নিজেদের মতো করে বাঁচতে শুরু করলো, তখন অনেক পুরুষ একে ভালোভাবে নিতে পারেনি।”
বর্তমানে তিনি জীবনের নতুন পথে হাঁটছেন। তিনি তাঁর সঙ্গীত জীবন, শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন।
তিনি বিশ্বাস করেন, একজন শিল্পী হিসেবে তিনি এখনও অনেক কিছু দিতে পারেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান