শিশুদের সুরক্ষা সামগ্রীর দামে দুঃসংবাদ! উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি, বিশেষ করে চীনের উপর আরোপিত শুল্ক, সেখানকার শিশুদের প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে নতুন বাবা-মায়েদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।

তারা এখন চিন্তিত যে কিভাবে এই বাড়তি দামের সঙ্গে তারা মোকাবিলা করবে। খেলনা থেকে শুরু করে শিশুদের গাড়ির সিট বা স্ট্রলার—সবকিছুই এখন ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

ডিম ও দুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যখন বাড়ছে, তখন শিশুদের সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি অভিভাবকদের জন্য আর্থিক চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ডেট্রয়েটের একটি বেবি পণ্যের দোকানে আসা নতুন বাবা-মায়েরা এখন জানতে চান, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কের কারণে স্ট্রলারের দাম কত বাড়বে, নাকি সরবরাহ শৃঙ্খলের জটিলতার কারণে সিট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

এই বিষয়টি এখন তাদের প্রধান উদ্বেগের কারণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের প্রয়োজনীয় পণ্যের ৯০ শতাংশেরও বেশি চীন থেকে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিগগিরই এই পরিস্থিতি বদলানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।

শুল্কের কারণে এরই মধ্যে অনেক পণ্যের দাম কয়েকশ ডলার পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে বাবা-মায়েরা হয় জিনিসপত্র কিনে ফেলছেন, নয়তো দাম কমার অপেক্ষায় থাকছেন।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক জেসন মিলার জানিয়েছেন, শিশুদের সুরক্ষা সিটের ৯৯ শতাংশ এবং স্ট্রলারের ৯৩ শতাংশ চীন থেকে আমদানি করা হয়। খেলনার ক্ষেত্রেও প্রায় ৮০ শতাংশ চীন থেকে আসে।

শ্রম-নিবিড় উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং চীনের কম মজুরি-সুবিধের কারণে অনেক কোম্পানি সেখানেই তাদের উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে একটি শিশুর প্রথম বছরে দেখাশোনার জন্য প্রায় ২০,০০০ ডলার খরচ হয়। এর মধ্যে নিরাপত্তা সামগ্রীর জন্য প্রায় ১,০০০ ডলার লাগে।

বেবি সেন্টার নামের একটি অনলাইন প্যারেন্টিং রিসোর্স বলছে, শুল্কের কারণে এই খরচ আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে অনেক বাবা-মা তাদের বন্ধুদের কাছ থেকে অগ্রিম উপহার হিসেবে নগদ টাকা বা গিফট কার্ডের প্রত্যাশা করছেন।

বর্তমানে স্ট্রলারের দাম গড়ে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং শিশুদের গাড়ির সিটের দাম প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, অনেক কোম্পানি সরকারকে শুল্ক কমানোর আবেদন জানাচ্ছে।

তারা বলছে, “শিশুদের ভালোবাসা দরকার, শুল্ক নয়।”

এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব হয়তো বাংলাদেশের উপর পড়ছে না, তবে বিশ্বায়নের যুগে এমন ঘটনা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ, উন্নত দেশগুলোতে হওয়া বাণিজ্যনীতি পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হয়। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর প্রভাব আরও গভীর হতে পারে।

বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়ছে, তাই শিশুদের সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি এখানকার অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে, বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *