মা-কে হারানোর পর ছবি প্রিন্ট করতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়া এক মার্কিন যুবকের গল্প, যা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে সবার।
জীবন সবসময় একরকম থাকে না, বিশেষ করে প্রিয়জন হারানোর শোক বুকে নিয়ে বেঁচে থাকাটা অনেক কষ্টের। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা জেস রবার্টসন।
তার মা ডনা রবার্টসন ছিলেন প্রকৃতির খুব ভক্ত। পাহাড় আর লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসতেন তিনি।
মায়ের সেই ভালোবাসাই যেন ছেলের মনে গেঁথে ছিল। মায়ের স্মৃতি হিসেবে একটি ছবি বাঁধাই করে রাখতে চেয়েছিলেন জেস।
ডনার মৃত্যুর পর, জেস তার বাবার দেখাশোনার পাশাপাশি মায়ের একটি ছবি বাঁধাই করার কথা ভাবেন। ছবিটা ছিল ডিজিটাল ফ্রেমে রাখা, যেখানে মায়ের একটি পুরনো ছবি ছিল।
এই ছবিটা সবসময় নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন জেস। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে ছবিটা প্রিন্ট করতে গিয়ে।
প্রথমে তিনি স্থানীয় একটি দোকানে যান, কিন্তু সেখানে উন্নত মানের ছবি প্রিন্ট করার ব্যবস্থা ছিল না। এরপর চেষ্টা করেন আরও কয়েকটি দোকানে।
কিন্তু কোথাও তেমন সুবিধা করতে পারেননি। হতাশ হয়ে তিনি যখন ফিরে আসছিলেন, তখন তার চোখে পরে মেনলো পার্কের ‘মাইক’স ক্যামেরা’র (Mike’s Camera) নাম।
সেখানে ফোন করে ছবি প্রিন্ট করার বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
ফোনকলের পরেই তিনি দোকানে ছুটে যান। সেখানে ক্রিশ্চিয়ান নামের এক কর্মচারী তার কথা শোনেন এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
কিন্তু সমস্যা ছিল, তাদের হাতে অনেক কাজ ছিল, তাই ছবি তৈরি করতে কয়েকদিন সময় লাগতো। জেস জানান, তিনি দ্রুতই এখান থেকে চলে যাবেন, তাই তার হাতে এত সময় নেই।
কথা বলতে বলতে জেসের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। ক্রিশ্চিয়ান তখন এগিয়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দেন এবং দ্রুত ছবিটা প্রিন্ট করার ব্যবস্থা করেন।
এমনকি, তারা জেসের পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও আরও দুটি ছবি প্রিন্ট করে দেন।
এই ঘটনার পর জেস আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই ছবি বাঁধাই হয়ে যায়।
তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরে ছবিটি নিজের বসার ঘরে রাখেন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি মায়ের স্মৃতি হিসেবে বাঁধাই করা ছবিটি দেখেন।
জেসের এই অভিজ্ঞতা তিনি টিকটকে শেয়ার করেন, যা দ্রুতই ভাইরাল হয়। বিষয়টি অনেকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
মানুষজন ক্রিশ্চিয়ানের মানবিকতাকে সাধুবাদ জানান। জেস মনে করেন, এই গল্পটি মানুষকে ভালোবাসতে এবং সহানুভূতি দেখাতে উৎসাহিত করবে।
জেস বলেন, মা সবসময় চাইতেন, মানুষ যেন ভালো থাকে এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। এই ঘটনা যেন তারই প্রমাণ।
তথ্য সূত্র: পিপলস