শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির দুঃসাহসিক পদযাত্রা: বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এক যুবকের লড়াই!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ এবং সামাজিক বিভাজন নিয়ে নির্মিত একটি নতুন তথ্যচিত্র, ‘হোয়াইট ম্যান ওয়াকিং’ সম্প্রতি বিবিসি ফোরে প্রচারিত হয়েছে।

ছবিটিতে শ্বেতাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাতা রব ব্লিস-এর ১৫০০ মাইল দীর্ঘ এক পদযাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি এই পদযাত্রা শুরু করেন।

মিসিসিপি থেকে শুরু করে ওয়াশিংটন ডিসি পর্যন্ত ব্লিসের এই যাত্রা পথে বর্ণবাদ এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের শিকার হওয়া মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।

তথ্যচিত্রে, তিনি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, যাদের মধ্যে কেউ ছিলেন ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সমর্থক, আবার কারো মধ্যে দেখা গেছে তীব্র বিদ্বেষ।

এই যাত্রা পথে ব্লিস-কে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে, এমনকি তার জীবনহানিরও সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল।

ছবিটির শুরুতে নির্মাতার এই ধরনের পদযাত্রার ধারণা অনেকের কাছেই বিতর্কের জন্ম দেয়।

শ্বেতাঙ্গ একজন মানুষের এমন উদ্যোগকে অনেকে ‘শ্বেতাঙ্গ ত্রাণকর্তা’র ধারণা হিসেবেও সমালোচনা করেছেন।

তবে, ধীরে ধীরে ব্লিসের সাহস এবং প্রতিকূলতার মধ্যেও আলোচনার আগ্রহ দর্শকদের মন জয় করে।

তিনি কারো সঙ্গে তর্কে না জড়িয়ে বরং আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছেন।

ছবিতে দেখা যায়, ব্লিস যখন জর্জিয়ার একটি শহরে কনফেডারেট জেনারেল জোসেফ ই. জনস্টনের একটি মূর্তির পাশে ‘নিগ্রোরা শ্বেতাঙ্গদের সমান নয়’— এমন একটি উদ্ধৃতি সম্বলিত ব্যানার স্থাপন করেন, তখন তার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল।

এই দৃশ্যে একদিকে যেমন সমাজের বিভাজন ফুটে ওঠে, তেমনি ভিন্ন মতাদর্শের মানুষের মধ্যে আলোচনা ও বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তাও স্পষ্ট হয়।

ব্লিসের এই যাত্রাপথে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের কর্মী চানেল হেলমের সঙ্গে হওয়া কথোপকথন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

হেলম ব্লিসের এই পদযাত্রাকে সমর্থন জানালেও এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

‘হোয়াইট ম্যান ওয়াকিং’ তথ্যচিত্রটি আমেরিকার সমাজের গভীর ক্ষতগুলো তুলে ধরেছে, যা দেশটির রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে আজও বিদ্যমান।

তথ্যচিত্রটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর চিন্তা ও উপলব্ধির জন্ম দেয়।

এই নিবন্ধটি বিবিসি ফোরে প্রচারিত ‘হোয়াইট ম্যান ওয়াকিং’ তথ্যচিত্রের একটি পর্যালোচনার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *